- সারাদেশ
- প্রতিবন্ধকতা জয়ে নাহিদের লড়াই
প্রতিবন্ধকতা জয়ে নাহিদের লড়াই

নাহিদ হাসান
প্রবল ইচ্ছাশক্তির সামনে কোনো প্রতিবন্ধকতাই যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না–তা প্রমাণে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভেড়াখালী গ্রামের নাহিদ হাসান। স্বাভাবিক আর ১০ জনের তুলনায় শারীরিকভাবে খর্বাকৃতির নাহিদ হাসান বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে অংশ নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে। লক্ষ্য, প্রশাসনিক ক্যাডার হওয়া।
২০০২ সালে কৃষক বাবা আরিফ মালিথা ও গৃহিণী মা পারভীন বেগমের ঘরে জন্ম নেন নাহিদ হাসান। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা এবং দরিদ্র পরিবারের সন্তান চার ফুট উচ্চতার নাহিদ হরিণাকুণ্ডু উপজেলার জোড়াদহ কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৪.০০ নিয়ে উত্তীর্ণ হন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়। এখন অংশ নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়।
নাহিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিজের প্রতিবন্ধকতা আমলে না নিয়ে স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যস্ত নাহিদ। পড়ালেখার পাশাপাশি তাঁর পছন্দ ফুটবল খেলা। স্থানীয়রা তাঁকে আদর করে ডাকেন ক্যাপ্টেন বলে।
নাহিদের মা পারভীন বেগম বলেন, ‘এখনও অনেক মানুষ নানা ধরনের কথা বলে। মাঝেমধ্যে ওর সামনে এবং আমাকেও বলে। তাদের কথায় প্রায়ই কষ্ট পাই। তবে ছেলের লড়াই দেখে গর্ব হয়।’
বাবা আরিফ মালিথা জানান, নিজের ২০ শতক জমি ছাড়া আর কিছুই নেই তাঁর। অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়। তবে সবচেয়ে বড় সম্পদ তাঁর সন্তানরা। আরিফ মালিথার স্বপ্ন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নাহিদ তাঁর কষ্টের পালা শেষ করবেন।
স্বপ্নবাজ নাহিদ হাসানের ইচ্ছা ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার। এই লক্ষ্যে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে চান তিনি। এ জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। ইংরেজি ও আইন বিভাগ পছন্দ তাঁর। নিজের খর্বাকৃতি নিয়ে একসময় খারাপ লাগলেও এখন সেটাকে আমলে না নিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে লড়াইটা চালিয়ে যেতে চান তিনি।
স্থানীয় জোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবু জানান, নাহিদের জীবনটা গল্পের মতো। তাঁর মাঝে দুর্বলতা নেই, আছে লড়াইয়ের শক্তি। তাঁর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।
মন্তব্য করুন