প্রায় ৩৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও তিন কোটি টাকা পাচারের চেষ্টার অভিযোগে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিক উদ্দিনসহ তিনজনের নামে মামলা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ বাদী হয়ে বুধবার দুদক কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন ওজোপাডিকোর সাবেক কোম্পানি সচিব আব্দুল মোতালেব এবং হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ও বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানির (বেসকো) সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়ে ওয়েনজুন।

ওজোপাডিকো থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালে প্রি-পেইড মিটার তৈরির জন্য ওজোপাডিকো ও হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি যৌথ মালিকানায় বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি (বেসকো) প্রতিষ্ঠা করে। শফিক উদ্দিন পদাধিকার বলে বেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন। আবদুল মোতালেব ছিলেন পরিচালক (অর্থ) এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন ইয়ে ওয়েনজুন। 

মামলায় অভিযোগ করা হয়, তাঁরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে সেবা গ্রহণ খাতে এলসি করে হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানির অনুকূলে কোনো প্রশিক্ষণ প্রদান না করা সত্ত্বেও এই খাতে ১৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। রিপিয়ার ট্রেনিং বাবদ প্রায় ৭ লাখ টাকা, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদানের জন্য লোক নিয়োগ করে তাদের বেতন ভাতা বাবদ ৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা প্রদান করেন। ‘থ্রি ইয়ারস ওয়ারেন্টি ফর মিটারস’ এর জন্য ৭ কোটি ২১ লাখ টাকা, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদানের জন্য ভিন্ন একটি এলসি মূলে পুনরায় এক কোটি ২৯ লাখ টাকা, প্রশিক্ষণ প্রদান না করা সত্ত্বেও ভিন্ন একটি এলসি মূলে পুনরায় ২৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। মিটার স্থাপনের পর তিন বছরের মধ্যে বেসকোর কারিগরি সেবা প্রদানের কথা থাকলেও পুনরায় ওই সেবা গ্রহণ বাবদ হেক্সিং কোম্পানিকে ৬৩ লাখ টাকা অতিরিক্ত প্রদান, সেবা-সংক্রান্ত এলসি মূলে ১৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেন। কোনো বিল ভাউচার ছাড়াই সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়ে ওয়েনজুনের অনুকূলে চার লাখ টাকা প্রদান এবং তিনি দেশে না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন সময়ে তাঁর নামে চার লাখ টাকা ব্যাংক চেকের মাধ্যমে খরচ দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়।

দুদকের মামলায় মোট ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক উদ্দিনের নির্দেশনা অনুযায়ী ইয়ে ওয়েনজুন এবং পরিচালক আব্দুল মোতালেব হেক্সিং কোম্পানির সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের সাড়ে তিন লাখ ডলার (দুই কোটি ৯৭ লাখ টাকা) আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিদেশে পাচারের অপচেষ্টা চালান বলে অভিযোগ করা হয়।