ফরিদপুরের সদরপুরে নির্মাণাধীন ব্রিজের মাটি ধসে ৩ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এ দাবি জানান।

নিক্সন চৌধুরী জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ৩ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, যাদের গাফিলতির কারণে তিনটি তাজা প্রাণ চলে গেল, ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। সাধারণ মানুষ তদন্ত কমিটি বলতে বুঝে ডিপ ফ্রিজ। ফ্রিজে ঢুকে গেলে আর কোনো খবর থাকে না।

৫ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের লাইভে স্থানীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, এই শ্রমিকরাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাপক উন্নয়নকে অব্যাহত রেখেছে। তার উন্নয়নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্ট, পরিশ্রম করেছে এই শ্রমিক ভাইয়েরা। শ্রমিকদের হত্যার বিচার কি হবে না? যদি বিচার হয়, তাহলে ২৪ ঘণ্টা পার হলেও কেউ গ্রেপ্তার হলো না কেন? শুনি শুধু তদন্ত কমিটি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ফরিদপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি শুদ্ধি অভিযান হয়েছে। সেই অভিযানের কারণ ছিল, একটা গ্রুপের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি। এসব করে তারা হাজার হাজার কোটি বিদেশে পাচার করেছে। এ ঘটনায় মানি লন্ডারিং মামলাও হয়েছে। তাদের পতনের পর সাধারণ মানুষ দু'হাত তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেছিলেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাদের পতনের পর আরেকটি গ্রুপ, প্রভাবশালী নেতারা আবার সেই টেন্ডারবাজি ও বালু কাটা শুরু করলেন। আজ যারা টেন্ডারবাজি করছে তাদেরই একটা প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে ৩ জনের প্রাণ চলে গেল। তারাই এখন ৬০ ভাগ টেন্ডারবাজি করে থাকে।

এমপি নিক্সন বলেন, শ্রমিক হত্যার বিচার পাব কি-না সন্দেহ আছে। আমি এটার তদন্ত দেখতে চাই না। দ্রুত বিচার চাই। যাদের গাফিলতিতে ৩টি তাজা প্রাণ চলে গেল, সেই পরিবারের মানুষের কি হবে? আসুন আমরা সবাই মিলে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করি। আমি আশাবাদী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশে আমরা আবারও নতুন টেন্ডারবাজ ও নতুন চাঁদাবাজমুক্ত ফরিদপুর পাব।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ মে সদরপুর উপজেলার ভাষাণচর ইউনিয়নের জমাদার ডাঙ্গী এলাকায় নির্মাণাধীন ব্রিজের মাটি চাপায় ৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মাটিচাপা আরও ৪ শ্রমিক পড়ে আহত হন।

মৃত শ্রমিকরা হলেন- বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর গ্রামের আল আমিন খাঁর ছেলে জাবেদ খাঁ (২৩), ফরিদপুর সদর উপজেলার কবিরপুর গ্রামের আফজাল শেখের ছেলে অন্তর শেখ (২২) ও কুফুরদিয়া গ্রামের ইসমাইল মীরের ছেলে জুলহাস মীর (২১)।

আহতরা হলেন– ফরিদপুর সদরের কুজুরদিয়া গ্রামের মনির খানের ছেলে সুমন খান (২৭), শোলাকুন্ডু গ্রামের রোকন মীরের ছেলে ওয়াহিদুল ইসলাম (৩০) এবং ঘোড়াদহ গ্রামের সিরাজ শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৫) ও মৃত খোলেক শেখের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩০)।

/এমএইচটি/