কেশবপুরে তীব্র গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দিনরাত কয়েক দফায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অর্ধেক থাকায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিস।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর কেশবপুর জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় প্রায় ৮০ হাজার আবাসিক, বাণিজ্যিক, সেচ ও শিল্প গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যায় ৮ থেকে ১০ মেগাওয়াট; যা চাহিদার তুলনায় প্রায় অর্ধেক। সন্ধ্যার শুরুতে সব জায়গায় একসঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবহার শুরু হয়। ফলে বাধ্য হয়ে সমন্বয় করে লোডশেডিং করতে হয়। এতে ১ ঘণ্টা পরপর চলে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া। পৌর শহরে লোডশেডিং একটু কম দেওয়া হয়। গ্রামাঞ্চলের অবস্থা বেশি খারাপ। এসব এলাকায় দিনরাত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে কয়েক দিন ধরে যশোর অঞ্চলে তাপমাত্রা বেড়েছে। দিনে ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠানামা করে। গত বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দিনের তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় ২ নং ফিডারে বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা। একদিকে তীব্র গরম, অন্যদিকে ঘন ঘন লোডশেডিং। সব মিলিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন।

পৌরসভার ভোগতী নরেন্দ্রপুর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রবীণ ব্যক্তি শফিকুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলার কারণে গা ঘেমে তাঁর পরিবারের শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা সর্দি-জ্বর, কাশিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

মজিদপুর গ্রামের গৃহবধূ নাসিমা বেগম বলেন, দীর্ঘ সময় পরপর বিদ্যুৎ আসার কারণে ফ্রিজে রাখা খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সাবদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং করা হচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ভীষণ ক্ষতি হয়েছে।

কেশবপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এস এম শাহীন আহসান বলেন, হঠাৎ গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে প্রায় অর্ধেক। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।