বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিল পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী ১৯ নেতাকর্মী বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কার হতে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে মহানগর বিএনপির তিনজন যুগ্ম আহ্বায়ক ও চারজন সদস্য এবং বাকিরা ওয়ার্ড ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পদে রয়েছেন। পদহীনও রয়েছেন কয়েকজন।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে ১৯ জনকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। তাদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। সেই হিসেবে শুক্রবার রাতে ২৪ ঘণ্টা শেষ হবে।

বরিশাল মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর জাহিদুল কবির সমকালকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার পর তারা কেন্দ্র থেকে শোকজ নোটিশ পেয়েছেন। রাতেই এই নোটিশ সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের প্রেরণ করা হয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রূহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়- ‘অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করছে। এই সরকারের কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের সদস্য হয়েও ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে এই সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবেনা। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।’

নোটিশপ্রাপ্ত নেতাকর্মীরা হলেন- স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন। কাউন্সিলর প্রার্থী তিন যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন- ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিবুর রহমান টিপু, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ ও ১৯ নম্বরের শাহ আমিনুল ইসলাম আমিন। মহানগর কমিটির সদস্যরা হলেন- সাধারণ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. সেলিম হাওলাদার, সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর জাহানারা বেগম, সংরক্ষিত ৯ নম্বরের বর্তমান কাউন্সিলর সেলিনা বেগম, সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রাশিদা পারভীন। এছাড়া ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সৈয়দ হাবিবুর রহমান ফারুক, মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবীর লিংকু, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সিদ্দিুকুর রহমান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউল হক মাসুম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাবের আবদুল্লাহ জাবির, জেলা তাতীদলের সাবেক সভাপতি কাজী মো. শাহিন, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক ইসলাম, ২২ নম্বরের মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জেসমিন সামাদ শিল্পি, ২৪ নম্বরের মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফিরোজ আহমেদ, ২৬ নম্বরের ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ২৮ নম্বরের মহানগর বিএনপির সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. হুমায়ন কবীর।

মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির তাকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি যথাসময়ে সময়ে এর জবাব দেবেন। বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শাহ আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘নোটিশ পেয়েছি, জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি’।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ মে সম্পন্ন হওয়া গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করায় ৩৯ নেতাকর্মী-সমর্থককে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে বিএনপি। বরিশাল সিটি নির্বাচনেও এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মহানগর বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন।