বাংলার সংস্কৃতি সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে কুমিল্লায় বাংলা সংস্কৃতি বলয়ের প্রথম বিশ্ব সম্মেলন উদ্বোধন করা হয়েছে। ‘সংস্কৃতি মনন গড়ে, বাংলা বলয় বিশ্বজুড়ে’ -এই স্লোগান নিয়ে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের ১২টি সাংস্কৃতিক অঞ্চলের ১৫০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছেন। 

শুক্রবার বিকালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বেলুন উড়িয়ে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীকে এম খালিদ এমপি। এসময় তিনি বলেন, ‘১৯৪৮ সাল থেকে ’৭১ পর্যন্ত ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি বারংবার কারাবরণ করেছেন। কোথায়ও ছিল না জিয়াউর রহমান ও এরশাদের অবদান। বরং তারা বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে ধংস করে গেছেন।’ 

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের সংস্কৃতি রক্ষায় বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা এবং গ্রামীণ পর্যায়েও যাত্রা, নাটক, মেলা কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রশাসনের অনুমতি লাগবে না। তবে অশ্লীলতা, হাউজি, জুয়া এসব করা হলে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’ 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাত, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখী। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা সংস্কৃতি বলয় এর সাময়িক বিশ্ব কমিটির সদস্য সচিব দীপক চন্দ্র ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কাজী মাহতাব সুমন। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ হাসান ইমাম মজুমদার ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সেবক ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথির মধ্যে ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র জেনারেল সেক্রেটারি আইয়ুব ভুইয়া, ইন্ডিয়া টুডে বাংলাদেশ এর এডিটর শাহিদুল হাসান খোকন ও চ্যানেল ২৪ এর হেড অব ডিজিটাল মিডিয়া রাজীব খান। 

বক্তারা বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম ও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙালির অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্যসমূহকে ধারণ, লালন ও সংরক্ষণ করার বিষয়ে জোর দেয়া হয়।  বক্তারা বলেন, ‘কাঁটা তারের বেড়া ভারত-বাংলাদেশ বিভক্ত করলেও আমাদের ভাষা-সংস্কৃতি কোনোভাবেই আলাদা করতে পারবে না।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের শিল্পীরা জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতীয় শিল্পীরা ‘সংস্কৃতি মনন গড়ে, বাংলা বলয় বিশ্বজুড়ে’ থিম সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সন্ধ্যায় ভারত-বাংলাদেশের নবীন ও বিশিষ্ট শিল্পীদের নিয়ে টাউন হল মাঠে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (৩ জুন) একই স্থানে সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-ভারতের অতিথিরা অংশগ্রহণ করবেন। সন্ধ্যায় থাকছে ভারত-বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিশিষ্ট শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।