- সারাদেশ
- সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য
সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য

সিন্ডিকেটের গণ্ডিতে বন্দি বাংলাদেশ। ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র কাজও চলছে এখন সিন্ডিকেটের আওতায়। সিন্ডিকেটে অর্থনৈতিক বিপর্যয়, টাকা পাচার ও দেশ অবনত হচ্ছে। জনসাধারণের খাদ্য জোগানে দিনের পর দিন ধুঁকছে। অমুক দুর্নীতির আঁকড়ায় বিত্তশালী হচ্ছে। এসব দেখে প্রতিহিংসা বাড়ছে ও দুর্নীতিতে ঝুঁকে যাচ্ছে সমাজ। তরুণ প্রজন্ম তা দেখে শিখছে, যা ভবিষ্যতের জন্য মোটেও মঙ্গলজনক নয়।
গত ২২ মে সমকালে মোশতাক আহমেদের ‘সিন্ডিকেট : সরকারের ভেতর সরকার’ শিরোনামে নিবন্ধটি পড়েছি। সরকার সিন্ডিকেটবাজদের কাছে অসহায়– তা স্বীকার করেছে। সরকারের দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মন্তব্য থেকে এ কথা স্পষ্ট হয়েছে।
তবে কি সিন্ডিকেটবাজদের কাছে সরকার জিম্মি? পৃথিবীতে এমন কোনো কিছু নেই, যেটা গড়ে উঠেছে কিন্তু ভেঙে ফেলা যায়নি।
বর্তমানে সিন্ডিকেটের থাবায় অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। বিভিন্ন পণ্যের দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ‘সরকারের ভেতর যে সরকার’ সিন্ডিকেট চক্রকে উৎসাহিত করে যাচ্ছে, তা ভেঙে দিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে এ সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগ ও সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। দেশের মানুষ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষিপণ্য উৎপাদন করছে। প্রতিনিয়ত শ্রম দিয়ে ভালো ফলন ফলাচ্ছে। কিন্তু তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত।
সব মহলে সিন্ডিকেট। সমকালে একই দিন (২২ মে) ‘মজুতদাররাই পেঁয়াজ করসাজির হোতা’ শিরোনামে খবরটি পড়েছি। কৃষকদের কাছ থেকে পণ্যটি অল্প মূল্যে কিনে মজুত রেখে সংকট তৈরি করে তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, পেঁয়াজের দাম ৪৫ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। অন্যান্য পণ্যদ্রব্যের দামও ক্রমে বাড়ছে; কমার লক্ষণ নেই। কে দেবে তার কৈফিয়ত? কে দেখবে খতিয়ে? উত্তর জানা নেই। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের খেয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। এখনই সময় সিন্ডিকেট চক্র ভেঙে ফেলার। আমরা স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিবাসী। আমরা কারও কাছে জিম্মি থাকতে রাজি নই। প্রতিটি মহল্লা থেকে শুরু করে এমপি-মন্ত্রী পর্যন্ত সিন্ডিকেটবাজদের শিকড় উপড়ে ফেলে সিন্ডিকেটমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য জোরালো দাবি জানাই।
খিলপাড়া, কিশোরগঞ্জ
মন্তব্য করুন