- সারাদেশ
- হাত তুলে ধরে ছোট ভাইয়ের জন্য ভোট চাইলেন হাসানাত
বরিশাল সিটি নির্বাচন
হাত তুলে ধরে ছোট ভাইয়ের জন্য ভোট চাইলেন হাসানাত

বরিশালের গৌরনদীতে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় ছোট ভাই মেয়র প্রার্থী খায়ের আবদুল্লাহের সঙ্গে কোলাকুলি করেন বড় ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। ছবি: সমকাল
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী করায় প্রকাশ্যে আসে পারিবারিক বিরোধ। বড় ভাই জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি এবং হাসানাতপুত্র সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে আবুল খায়েরের পুরোনো বিরোধের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সিটি নির্বাচনে। গত ৪৮ দিনে নানা নাটকীয়তার পর শনিবার গৌরনদী উপজেলায় দুই ভাই একমঞ্চে উঠলেন। ছোট ভাই আবুল খায়েরের জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট চাইলেন আবুল হাসানাত। এর আগে দুই ভাই কোলাকুলি করেন।
সিটি নির্বাচন উপলক্ষে গৌরনদী পৌরসভা প্রাঙ্গণে বিভাগের ৫ জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন আবুল খায়ের। এর আগে গত ২৬ মে একই স্থানে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা হয়। এতে আবুল খায়ের ও তাঁর অনুসারী নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেননি।

দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উদ্যেগে গৌরনদীতে দুটি বর্ধিত সভা হলো। শনিবারের সভায় বিভাগের ৫ জেলা আওয়ামী লীগের সব সদস্য, শহর ও উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়ররা অংশগ্রহণ করেন। সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান জেলা সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।
আবুল খায়ের আবদুল্লাহ বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল নগর থেকে ৪২ কিলোমিটার দূরে গৌরনদীতে পৌঁছান। তিনি সরাসরি পৌরসভা প্রাঙ্গণে বর্ধিত সভার মঞ্চে যান। মঞ্চে থাকা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এগিয়ে এসে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। মঞ্চে হাসানাতের ডান পাশের চেয়ারে বসেন আবুল খায়ের। পৌনে ৪টার দিকে আবুল খায়ের প্রায় পাঁচ মিনিট বক্তৃতা করে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হন। তিনি চলে আসার পরও সভা অব্যাহত থাকে।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক সমকালকে বলেন, নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্বনির্ধারিত উঠান বৈঠক ছিল প্রার্থী আবুল খায়েরের। এ কারণে তিনি দ্রুত ফিরে এসে উঠান বৈঠকে যোগ দেন। গৌরনদীর বর্ধিত সভায় আবুল খায়ের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে বরিশাল সিটিতে মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি বিজয়ী হলে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মানিত করা হবে। এ জন্য তিনি সবার সহযোগিতা চান।
বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তৃতায় আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ নেতাকর্মীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যাঁরা বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন, তাঁদের দায়িত্ব হলো মহানগর আওয়ামী লীগের ৩০টি ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের সঙ্গে থেকে প্রচারে সহযোগিতা করা। নগরের যেসব এলাকায় আঞ্চলিক ভোট রয়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা গিয়ে নৌকার জন্য ভোট চাইবেন। আমার ছোট ভাই যাতে নৌকা প্রতীকে জয়যুক্ত হয় এই আশাবাদ করছি।’ তিনি মঞ্চে ছোট ভাইয়ের হাত তুলে ধরে বিভিন্ন জেলার নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা ওয়াদা করেন, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে খোকনকে (আবুল খায়ের) নৌকা মার্কায় জয়ী করবেন।’
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় টিমের সমন্বয়ক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মো. গোলাম কবীর রাব্বানী চিনু, সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ শম্ভু ও আ স ম ফিরোজ। সভায় বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৬ মে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং শনিবার বিভাগীয় বর্ধিত সভায় অংশ নেননি ঢাকায় অবস্থানরত সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। ২৬ মের সভায় আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সাংবাদিকদের বলেন, মেয়র সাদিক ঢাকায় বসে বরিশাল সিটি নির্বাচন তদারকি করবেন। অন্যদিকে প্রার্থী আবুল খায়েরের অনুসারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, সাদিক বরিশালে এলে প্রতিহত করা হবে।
মন্তব্য করুন