- সারাদেশ
- শাহবাগে প্রতিবন্ধীদের কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা
শাহবাগে প্রতিবন্ধীদের কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

প্রতিবন্ধী ভাতা পাঁচ হাজার টাকা করাসহ ১১ দফা দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। ছবি: সমকাল
প্রতিবন্ধী ভাতা পাঁচ হাজার টাকা করাসহ ১১ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলে পুলিশের বাধায় পড়ে ‘সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজ’। পরে তারা শাহবাগ মোড়ে বসে পড়েন। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা থেকে শাহবাগমুখী যান চলাচল দীর্ঘসময় বন্ধ থাকে।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তারা আন্দোলন স্থগিত করে চলে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিন সকাল ১০টায় তারা জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলে তাদের শাহবাগেই আটকে দেয় পুলিশ। পরে এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।
সন্ধ্যায় সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের অন্যতম সমন্বয়ক সাবরিনা সুলতানা বলেন, তাদের দাবি-দাওয়া আলোচনার জন্য তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন এবং তাদের অনেকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে। তাদের অসুবিধা হতে পার। আগামী ১৪ জুনের মধ্যে তাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
আন্দোলন কর্মসূচিতে তারা বলেন, সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বিশাল আকারের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতাসহ সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কোনো ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়নি। বর্তমানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা মাসিক ৮৫০ টাকা, উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাজারে এটি খুবই অপ্রতুল। পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের তুলনায় খুবই কম। প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ না থাকায় তারা বাজেট ক্ষোভের সাথে প্রত্যাখ্যান করেন।
তারা বলেন, ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা মাসিক ৩০০০ টাকায় উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বিগত বছরের মত এ বছরের বাজেটেও সরকার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, প্রতিবন্ধীদের প্রত্যাশিত কর্মসংস্থান না হওয়া এবং দারিদ্র্যের হার আরও বাড়ার কারণে তাদের ভাতা মাসিক পাঁচ হাজার টাকা দরকার।
তাদের দাবির মধ্যে আরও আছে, প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা উপবৃত্তি দুই হাজার টাকা, সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী কোটা, বাংলাদেশ ব্যাংকে এক হাজার কোটি টাকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উদ্যোক্তা তহবিল গঠন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদফতরকে কার্যকর করা।
বাংলা ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট প্রণয়ন, শিক্ষা ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অভিন্ন জাতীয় শ্রুতিলেখক নীতিমালা, নিরন্ন, শ্রমজীবী- মেহনতি প্রতিবন্ধী মানুষদের একটি বাড়ি একটি খামার ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যবস্থা করা, গুরুতর প্রতিবন্ধী মানুষের স্বাস্থ্য ভাতা, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয় সংসদ সকল স্তরে প্রতিবন্ধী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা ও মন্ত্রণালয়ভিত্তিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংবেদনশীল বাজেট দেওয়া।
কর্মসূচিতে সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের সমন্বয়ক সালমা মাহবুব, ইফতেখার মাহমুদ, উজ্জ্বল বণিকসহ শতাধিকজন অংশগ্রহণ করেন।
মন্তব্য করুন