‘আমি নিরদোশ (নির্দোষ)। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ইন্দুরকানী থানার ওসি এনামুল হক আর পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির হোসাইন। আমি ইন্দুরকানী থানার ওসির টাকা চুরি করি নাই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার মৃত্যুর পর পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) না করে আমাকে মামার বাড়িতে দাফন করবেন।’ 

মৃত্যুর আগে এই চিরকুট লিখে গেছেন পিরোজপুর সদর থানায় কর্মরত ঝাড়ুদার মামুন শেখ (৩২)। সোমবার সকাল সাড়ে নয়টায় পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে তিনি নিজ বাসায় বিষ পান করেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। 

পরে তাকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থা অবনতি হলে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা অবস্থা উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেলে থাকা মামুনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম মোবাইল ফোনে বলেন, টাকা চুরির অপবাদে সদর থানায় রোববার বিকেলে পুলিশ আমার স্বামীকে মারপিট করে। তাই রাগে-দুঃখে-ঘৃণায় আমার স্বামী আর এই চাকরি করবে না বলে আমাকে জানায়। পরে সোমবার সকালে বাজার করে একটা চিরকুট লিখে বিষ পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। 

ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. এনামুল হক বলেন, মামুন শেখ ইন্দুরকানী থানার ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করতেন। গত মার্চে তাকে সদর থানায় বদলি করা হয়। ওই সময় মামুনের শ্যালকের স্ত্রীর সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্কের বিষয় আমার কাছে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী মরিয়ম। তখন ওই বিষয় আলোচনা করে উভয়কে শান্ত থাকতে বলি। টাকা চুরির কোনো ঘটনা আমার থানায় ঘটেনি।

পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মো. হোসাইন বলেন, আমি ২৫ দিন এই থানায় যোগদান করেছি। রোববার মামুনকে কাজ করতে দেখেছি। তার সঙ্গে আর দেখা হয়নি। তিনি ইন্দুরকানীর বাসায় বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনেছি। আর কিছু জানি না।

/এইচকে/