- সারাদেশ
- ২৪ কিলোমিটার সড়কে দুর্ভোগ
২৪ কিলোমিটার সড়কে দুর্ভোগ

মেঘনা উপজেলায় এলজিইডির সড়কটি খানাখন্দে ভরা- সমকাল
খানাখন্দে বেহাল হয়ে পড়েছে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় এলজিইডির ২৪ কিলোমিটার সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষকে। কার্পেটিং উঠে অসংখ্য গর্তের তৈরি হয়েছে।
প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা এড়াতে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। সড়ক ভাঙাচোরা হওয়ার অজুহাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন অটোরিকশার চালকরা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে জানা গেছে, মেঘনা উপজেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে গজারিয়া উপজেলার ভাটেরচর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা। মানিকারচর বাজারের দিদার মেম্বারের মোড় থেকে আলীপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা ও মানিকারচর বাজার থেকে রামপুর বাজার পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। রাস্তাগুলো তিন বছরের বেশি সময় ধরে সংস্কার করা হয়নি।
সড়কগুলো দিয়ে গোবিন্দপুর, বড়কান্দা, বাহেরখোলা, মানিকারচর বিশেষ করে উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ভাটেরচর পর্যন্ত সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হোমনা, তিতাস, মুরাদনগর ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় যাতায়াত করছে শত শত যানবাহন ও যাত্রী। কিন্তু ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে আগের থেকে বেশি ভাড়া আদায় করছেন যানবাহনের চালকরা। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্য নিয়ে আসেন এই রাস্তা দিয়ে। বেহাল রাস্তার কারণে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এসব রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান, ট্রাক, বাস চলাচল করছে।
মেঘনা বাসস্ট্যান্ড থেকে ভাটেরচর পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত। অনেক জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে আছে। অনেক জায়গায় বৃষ্টির কারণে রাস্তা ভেঙে সংকুচিত হয়ে গেছে।
মানিকারচর বাজারের দিদার মেম্বারের মোড় থেকে আলীপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন জায়গায় কার্পেটিং উঠে গর্ত হয়ে গেছে। সড়কের অনেক অংশে মোটরসাইকেল দিয়ে যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
মানিকারচর রামপুরঘাট পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার সড়কে দেখা গেছে, রাস্তার বিভিন্ন অংশের কার্পেটিং উঠে গর্তের তৈরি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে রাস্তার অনেক জায়গায় ভাঙন ধরেছে। সংকুচিত রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
অটোরিকশার চালক বেলাল হোসেন জানান, রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে সুস্থ মানুষেরও নাভিশ্বাস ওঠে। অনেক সময় রিকশায় করে এই রাস্তা দিয়ে রোগী নিয়ে গেলে তাঁদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ে।
ভ্যানচালক আবদুর রশিদ বলেন, ‘ভাঙাচোরা রাস্তায় ভ্যান চালাতে গিয়ে প্রায়ই নাটবল্ট খুলে পড়ে যায়। ফলে সারাদিন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে যা রোজগার করি, তার একটা অংশ মেরামতেই শেষ হয়ে যায়। ২০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে ৪০-৪৫ মিনিট।’
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক রহিম মিয়ার ভাষ্য, বেহাল রাস্তার কারণে প্রতি মাসে গাড়ি মেরামত বাবদ অনেক টাকা খরচ করতে হয়। তাই ভাড়া একটু বাড়িয়ে নিতে হচ্ছে। এই রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে শারীরিক অনেক সমস্যা হচ্ছে তাঁদের।
মুরাদনগর উপজেলা সদরের মাইক্রোবাসের চালক শাহ আলম জানান, মেঘনা হয়ে ঢাকায় যাওয়া অনেক সহজ। কিন্তু রাস্তাগুলোর করুণ অবস্থার কারণে তাঁদের যেতে বেগ পেতে হয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আলীম হোসেন বলেন, উপজেলার কয়েকটি রাস্তার অবস্থা খুবই বেহাল। উপজেলা সদর কিংবা ঢাকায় যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে রাস্তাগুলো সংস্কার না হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে। এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন অটোরিকশার চালকরা।
এলজিইডির মেঘনা উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম সিকদার জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য করুন