চোর অপবাদ দিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক নারীকে গ্রাম্য সালিশে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে তাঁকে এক লাখ টাকা জরিমানাও করেন মাতবরা। 

সোমবার রাতে উপজেলার উপজেলার বামন্দহ গ্রামে এ ঘটনার শিকার হন ওই গ্রামের আবেদ আলীর স্ত্রী সালমা আক্তার (৪২)। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানায় অভিযোগ দেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে সালমা আক্তারের বাড়িতে অটোরিকশায় করে আসা তিন ব্যক্তি পানি পান করতে চান। সঙ্গে করে আনা জুস সেখানেই পান করেন। সালমা বাড়ির অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। খানিক পর বারান্দায় এসে তিনজনের একজনকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতেন দেখেন। অটোরিকশাটিও ছিল না। 

পরে তেঁতুলজাতীয় খাবার খাইয়ে কিছু ওই ব্যক্তির জ্ঞান ফেরান বাড়ির লোকজন। নিজেকে অটোরিকশার চালক পরিচয় দিয়ে আমির হোসেন নামের ওই ব্যক্তি। তিনি জানান, দুই ব্যক্তি গরু কেনার কথা বলে অটোরিকশাসহ তাঁকে সেখানে নিয়ে এসেছে। তাদের নাম-পরিচয়ও জানেন না। 

এ নিয়ে সোমবার রাতে স্থানীয় মাতবর হেলাল উদ্দিন, তাঁর ছেলে নাহিদ হোসেন, আজিজ রহমান, তৈইজুদ্দিন, ইমরান হোসেন ও সায়েদ মিয়া সালিশ বসান। সেখানে অর্ধশতাধিক গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে সালমা আক্তারকে বাড়ি থেকে ডেকে নেওয়া হয়। অটোরিকশা চোর অপবাদ দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। পরে এক লাখ টাকা জরিমানার কথা বলে ৩০০ টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সই নেওয়া হয়। 

সালমার ভাষ্য, ‘মিথ্যা অভিযোগে হেলাল উদ্দিন ও তাঁর ছেলে বাড়ি থেকে মারতে মারতে সালিশে নিয়ে যান।’ এ বিষয়ে মঙ্গলবার রাতে তিনি থানায় অভিযোগ দেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করেন সালমা।

তবে মাতবর নাহিদ হোসেন দাবি করেন, ‘ওই মহিলা অটোরিক্সা চোরের (চক্রের) সঙ্গে জড়িত। তা না হলে তাঁদের বাড়িতে ওই লোকজন আসলো কেন? চোর সন্দেহেই সামাজিক বিচার করা হয়েছে। এক লাখ টাকা জরিমানার রায়ও দেওয়া হয়েছে।’

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।