বিচারকদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘আপনাদেরকে দেশের সংবিধান সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন ক্ষমতা দিয়েছে। আর কাউকেই সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। বিচার প্রার্থীর ন্যায়বিচার সম্পাদনে আপনারা স্বাধীনভাবেই বিচার কাজ করবেন। কোনো মানুষের কথা শোনার দরকার নেই।’

শুক্রবার সকালে চাঁদপুরে বিচার বিভাগ আয়োজিত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বিচারকদের উদ্দেশ্যে এসব বলেন।

জেলা ও দায়রা জজ ভবনের সেমিনার কক্ষে চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মহসিনুল হকের সভাপতিত্বে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আরও বলেন, ‘সরকার ব্যবস্থায় যারা থাকেন, তাদের মানুষের কথা চিন্তা করতে হবে, সেইভাবেই আইন সৃষ্টি করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিচারকরা চাইলে আইডিয়া দিতে পারি, যদি আমাদের কাছে চাওয়া হয়।’

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘দেশে বিচারকের সংখ্যা কম। ১৮ কোটি মানুষের অনুকূলে প্রতি ৯০ হাজার লোকের জন্য একজন বিচারক। বিচারক বাড়াতে হবে।’

মাঠ পর্যায়ে বিচারকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘পোষ্ট মোর্টেম রিপোর্ট এবং পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট যেন যথাযথ সময়ে আসে সেদিকে দৃষ্টি দেবেন। অনেক সময়ে এই রিপোর্ট ঠিক হয় না, বা ঠিক মতো আসে না। ডাক্তার কিংবা সাক্ষী তার সাক্ষ্য দিতে আসতে চায় না, সেক্ষেত্রে কঠোর হবেন। বিচারালয়ে প্রযুক্তিগত কাঠামো বাড়াতে হবে। বিচারকরা সর্বদা কর্মস্থলে থাকার চেষ্টা করবেন।’

তিনি আরো বলেন, বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগ এবং পুলিশের (জজ, ডিসি, এসপি) সমন্বয় দরকার। এ তিনে মিলে সমন্বিত কর্মশালা দরকার। এতে করে সমন্বয় হয়। এর জন্য একটা ইনস্টিটিউট দরকার। আমি এটি প্রত্যাশা করি। এদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য আমাদের সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।

কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী,  জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ টি এম মোস্তফা কামাল, বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সহধর্মিণী বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য বেগম নাফিসা বানু প্রমুখ।