- সারাদেশ
- ধারের টাকা চাওয়ায় খুন
ধারের টাকা চাওয়ায় খুন

প্রতীকী ছবি।
ধারের টাকা চাওয়ায় মানিকগঞ্জে আব্দুর রহিম মিয়াকে খুন করা হয়। চা দোকানি বিল্লাল হোসেন তাকে চেতনানাশক খাইয়ে ও গলা টিপে হত্যা করে। এ ঘটনায় মানিকগঞ্জের দৌলতপুর এলাকা থেকে মূল পরিকল্পনাকারী বিল্লাল, তার সহযোগী আশিক হোসেন ওরফে মনির ও শাহিনুর ইসলাম ওরফে সোহানকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মানিকগঞ্জ জেলা পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি জানান, গত ৫ জুন নিখোঁজ হন আব্দুর রহিম। দুদিন পর দৌলতপুর থানায় এজন্য জিডি করেন তাঁর ভাই মিন্টু মিয়া। ওই দিন কাকনা উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের পাশে বাঁশঝাড়ে নিখোঁজ আব্দুর রহিমের লাশ শনাক্ত করেন। পরে পুলিশে খবর দিলে দৌলতপুর থানার একটি টিম ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এ ঘটনায় মিন্টু মিয়া অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন।
জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রথমে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মনিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন তার দেওয়া তথ্যে সোহানকে আটক করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মূল পরিকল্পনাকারী বিল্লাল হোসেনের কথা। তাদের সবাইকে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর এলাকা থেকে দুদিনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিরা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বিষের বোতল, চেতনানাশক ওষুধ মিশ্রিত কোমলপানীয় গিয়ারের বোতল কাকনা উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনের খালে ফেলে দেয়। পরে পিবিআই ১৬ ঘণ্টা সেচে মোবাইল ফোনসহ হত্যায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করে।
পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, অত্যন্ত দরিদ্র ও অসহায় আব্দুর রহিম বাজারে দোকানে দোকানে কলসিতে করে পানি সরবরাহ করতেন। দোকানিদের বাড়িতে বাজার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতেন। এতে সামান্য আয় দিয়ে বাকপ্রতিবন্ধী স্ত্রী, ছোট দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে চলত তাঁর সংসার। এলাকাবাসীর সাহায্য-সহযোগিতায় কয়েক বছরে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন। সেই টাকা বিভিন্ন জনকে ধারে দিতেন তিনি। নিহতের প্রতিবেশী একই গ্রামের চা বিক্রেতা বিল্লাল লাভের ওপর টাকা নিয়ে তার স্ত্রী নূপুরকে বিদেশে পাঠায়। সেই টাকা ফেরত চেয়ে তাগাদা দিতে থাকেন রহিম। পরে আসামি টাকা ফেরত না দিয়ে তার আত্মীয় পেশাদার খুনি মনির ও সোহানকে দিয়ে তাঁকে হত্যার চুক্তি করে। তাদের চুক্তির ১০ হাজার টাকা পরিশোধও করে বিল্লাল।
গত শুক্রবার গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে হাজির করা হয়। এদের মধ্যে মনির আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তারা কারাগারে আছে।
/এইচকে/
মন্তব্য করুন