ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

১৩ বছর পর বাড়ি ফিরলেন 'হারকিউলিস'

১৩ বছর পর বাড়ি ফিরলেন 'হারকিউলিস'

বাড়ি ফেরার সময় চার ভাইয়ের সঙ্গে হারকিউলিস। ছবি-সমকাল

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ আগu ২০২৩ | ১২:১৮ | আপডেট: ১৪ আগu ২০২৩ | ১২:১৮

ফেসবুকের সুবাদে ১৩ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরলেন 'হারকিউলিস'। মানসিক ভারসাম্যহীন হারকিউলিসের ভালো নাম মাহবুব মোর্শেদ (৫১)। তার বাড়ি রংপুর জেলার আলমনগর উপজেলার নুরগঞ্জে। বাবার নাম আব্দুস সাত্তার। 

জানা যায়, ২০১০ সালে হারকিউলিস সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের ধামাইকান্দি বাজারে আসেন। এরপর থেকে এই বাজারেই থাকতেন তিনি। যখন যে দোকানের বারান্দা খালি পেতেন অথবা চায়ের দোকানে জায়গা পেতেন সেখানেই ঘুমাতেন। বাজারের লোকজন ও স্থানীয়রা পাগল বলে আখ্যায়িত করে হারকিউলিসকে সহায়তা করতেন। 

সোমবার বিকেলে হারকিউলিসের চারভাই এসে ধামাইকান্দি বাজার থেকে তাকে বাড়ি নিয়ে যান। বাজারের পার্শ্ববর্তী ভয়নগর গ্রামের আব্দুস সালাম ফেসবুকে হারকিউলিসকে নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিলে তার ভাইয়েরা সন্ধান পান।

বাঙ্গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, হারকিউলিসকে ধামাইকান্দি বাজারের আব্দুস সাত্তার, দেলবার হোসেনসহ স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি নিয়মিত খেতে দিতেন। হারকিউলিস খুব কথা বলতেন। কিন্তু কথা ছিল অসংলগ্ন। বাড়ির কথা বলতে পারতেন না তিনি। শুধু তার নাম হারকিউলিস বলতেন। অনেক সময় আমি তাকে নগদ টাকা এবং ত্রাণ দিয়েছি। মানসিক ভারসাম্যহীন এই ব্যক্তি বাজারে যত্রতত্র থাকলেও কারো কোনো ক্ষতি করেনি। ফলে সবাই তাকে ভালোবাসত। প্রায় ১৩ বছর পর হারকিউলিস তার বাড়িতে ফিরছে এতে আমরা সবাই খুশি।

পার্শ্ববর্তী ভয়নগর গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তির মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ধামাইকান্দি বাজারে হারকিউলিস অবস্থান করতেন। বিষয়টি তিনি জানতে পেরে এক সপ্তাহ আগে ফেসবুকে ছবিসহ একটি বিজ্ঞপ্তি দেন। এরপর রংপুরে হারকিউলিসের বাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়। অবশেষে সোমবার হারকিউলিসের চারভাই ধামাইকান্দি বাজারে আসেন। এই চারভাই হলেন- মো. রবিন, পারভেজ আলম, যুবরাজ ও রাজন। তাদের আরও তিনটি বোন রয়েছে।

হারকিউলিসকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় তার ভাই মো. রবিন জানান, ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৩৮ বছর বয়সে হারকিউলিস মানসিক ভারসাম্য হারান। হঠাৎ একদিন তিনি নিখোঁজ হন। এরপর থেকে বহু খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। অবশেষে ফেসবুকে আব্দুস সালামের বিজ্ঞপ্তি থেকে তারা তাদের ভাইয়ের সন্ধান পান। 

এসময় তারা স্থানীয় চেয়ারম্যান সোহেল রানা, আব্দুস সালাম, আব্দুস সাত্তার, দেলবার হোসেনসহ ধামাইকান্দি বাজারের সব দোকানি ও স্থানীয় লোকজনকে তার ভাইকে খেতে ও থাকতে দেওয়ায় এবং মানবিক সহযোগিতা করায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। 

হারকিউলিসকে সাহায্যকারী আব্দুস সাত্তার ও দেলবার হোসেন জানান, হারকিউলিস তার পরিবারের কাছে ফিরে যাচ্ছে এতে তারা খুশি। কিন্তু দীর্ঘদিন তাদের কাছে থাকায় তার প্রতি একটা মায়া হয়ে গেছে। তাই খারাপ লাগছে।

আরও পড়ুন