ঢাকা বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

শিকলমুক্ত সেই জুনায়েদ, হতে চায় পাইলট

শিকলমুক্ত সেই জুনায়েদ, হতে চায় পাইলট

জুনায়েদ মোল্লা। ফাইল ছবি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৪:২৪ | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৪:২৪

শিকলমুক্ত হয়েছে ভিসা পাসপোর্ট ছাড়াই বিমানে ওঠা আলোচিত সেই জুনায়েদ মোল্লা। না বলে আর কোথাও যাবে না, এমন প্রতিশ্রুতি দিলেই শিকল খুলে দেওয়া হয়। তবে পড়াশোনা খরচ দিতে না পারায় বারবার পালিয়ে যেত বলে জানায় ওই শিশুটি। পড়ালেখা করে পাইলট হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে জুনায়েদ।

শুক্রবার দুপুরে জুনায়েদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, খুলে দেওয়া হয়েছে জুনায়েদের পায়ের শিকল। এরপরই সে মুক্ত পরিবেশে ঘুরে বেড়িয়েছে। তবে এখনও তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। 

জুনায়েদ গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার পারইহাটি ইমরান মোল্লার ছেলে। 

গত বুধবার সকালে ঢাকা বিমানবন্দর থানা থেকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার পারইহাটি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আনা হয় আলোচিত শিশু জুনায়েদ মোল্লাকে। এর পর বারবার পলানোর কারণে শিকলবন্দি করে রাখা হয় তাকে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। পরে খুলে দেওয়া হয় শিকল। এরপর থেকে মুক্ত পরিবেশে আবারও ঘুরে বেড়াতে পারছে শিশুটি। তবে পরিবার থেকে পড়ালেখার খরচ দিতে পারত না। এ কারণে মাদ্রাসা থেকে বকাঝকা করায় বারবার পালিয়ে যেতো সে। তবে এবার আর পালানো নয়, পড়ালেখা করে পাইলট হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে জুনায়েদ। ঘুরতে চায় দেশ-বিদেশ।

শিশু জুনায়েদ বলে, ‘মাদ্রাসায় পড়ার সময় আব্বার আছে কাগজ ও কলম কেনার টাকা চাইতাম। আব্বা পড়ালেখার খরচ দিতে পারত না। খাতা–কলমের জন্য হুজুর মারত। মার খাওয়ার ভয়ে মাদ্রাসা থেকেও মাঝে মধ্যে পালিয়ে যেতাম।’

জুনায়েদ আরও বলে, ‘আমি পড়ালেখা শিখতে চাই। পাইলট হয়ে বিমানে দেশ-বিদেশ ঘুরতে চাই। সরকার যদি সাহায্য করত, আমি পড়ালেখা শিখতাম।’

জুনায়েদের বাবা ইমরান মোল্লা বলেন, ‘ওর বয়স যখন ৬ বছর, তখন মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেই। মাকে দেখার জন্য মন সব সময় ব্যাকুল থাকত। মাঝে মধ্যে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে প্রথমেই তার মায়ের কাছে যেত। মা তাকে আশ্রয় দিত না। কষ্টে সে অন্যত্র যেত। সেখান থেকে খুঁজে নিয়ে আসতাম। মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে নিয়ে এসে পায়ে শিকল দিয়েছিলাম যাতে আবার পালিয়ে যেতে না পরে। তরে খবর প্রকাশ হওয়ার পর শিকল খুলে দিয়েছি।’

গত সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ওঠে পড়েছিল শিশু জুনায়েদ। রাত সোয়া ৩টার দিকে ওই ফ্লাইট উড্ডয়নের কথা ছিল। প্রায় ঘণ্টার মত ওই ফ্লাইটের সিটে বসে ছিল জুনায়েদ। পরে এক যাত্রী উঠে অন্য সিটে বসতে বললে ধরা পড়ে পাসপোর্ট, টিকিট ও বোর্ডিং পাস ছাড়াই বিমানে ওঠা জুনায়েদ। পরে বিমানবন্দর থানা পুলিশ শিশুটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

আরও পড়ুন