সারাদেশের মতো সিলেটেও প্রতিদিন শনাক্ত হচ্ছে ডেঙ্গু রোগী। এসব রোগীর শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে সাধারণ স্যালাইন (এনএস) ব্যবহারের নির্দেশনা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে ডেঙ্গু পরিস্থিতির কারণে বাজারে এসব স্যালাইনের চাহিদা বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজার থেকে যেন রীতিমতো উধাও হয়ে গেছে স্যালাইনের মজুত।

ক্রেতাদের অভিযোগ, ফার্মেসি মালিকরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে স্যালাইন বিক্রি করছেন। কোথাও আবার ‘স্যালাইন নাই’ বলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

কয়েক দিনের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর চৌহাট্টা এলাকার ফার্মেসিগুলোতে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ওই সময় স্থানীয় সেন্ট্রাল ফার্মেসিকে ১৫ হাজার ও স্কয়ার ফার্মেসিকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক শ্যামল পুরকায়স্থ জানান, স্যালাইন থাকার পরও ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন অনেক ফার্মেসি ব্যবসায়ী। আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন এসব স্যালাইন। স্যালাইন থাকার পরও ক্রেতাদের ফিরিয়ে দেওয়ায় দুটি ফার্মেসিকে জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান সহকারী পরিচালক।

এদিকে অভিযানের পরও দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়নি। শুক্রবার নগরীর কাজলশাহ এলাকার একটি ফার্মেসিতে মজুত সংকট দেখিয়ে স্যালাইনের দাম ৪০০ টাকা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন শাহি ঈদগাহ এলাকার বাসিন্দা ওবায়দুর রহমান। তিনি জানান, তাঁর ভাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্যালাইন কিনতে গেলে ফার্মেসির লোকজন প্রথমে ‘নাই’ বলে জানান। পরে আবার ৪০০ টাকা দাবি করেন একটি স্যালাইনের জন্য। অথচ এসব স্যালাইনের বাজারমূল্য ১০০ টাকারও কম।

সিলেটের অতিরিক্ত সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত সমকালকে জানান, নরমাল স্যালাইন বা এনএসের সংকট বাজারে নেই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন। এ অবস্থায় বাজার তদারকি শুরু করা হয়েছে।

অতিরিক্ত সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত আরও জানান, সিলেট নগরীর ফার্মেসিগুলোকে ‘নরমাল স্যালাইন পাওয়া যায়’ লেখা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখতে জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা না মানা হলে বা সাধারণ ক্রেতাদের স্যলাইন কেনার ক্ষেত্রে হয়রানি করা হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।