গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনন্য সাক্ষাৎ নামে স্মৃতিসৌধটি ঘিরে রেখেছে বিদ্যুতের তার-খুঁটি। এ স্মৃতিসৌধের ওপরের অংশে জালের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার। বিদ্যুতের খুঁটি, তার ও ট্রান্সফরমারে ঢাকা পড়েছে এ স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য। ঐতিহাসিক এই স্মৃতিসৌধ এলাকা থেকে বিদ্যুতের তার ও খুঁটি অপসারণের দাবি করেছেন জেলার বাসিন্দারা।

১৯৩৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর প্রথম সাক্ষাৎ হয় গোপালগঞ্জে। বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থে এ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।

এ স্মৃতি ধরে রাখতে ও নতুন প্রজন্মের কাছে এ ইতিহাস জানান দিতে অনন্য সাক্ষাৎ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। গত বছর জেলা শহরের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়াম এলাকায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ঐতিহাসিক এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্মৃতিসৌধের সামনের একটি বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। দক্ষিণ পাশে আরও দুটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে রয়েছে ট্রান্সফরমার। ওপরে জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার। এগুলোই স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য ম্লান করে দিয়েছে।

শহরের ব্যাংকপাড়ার বাসিন্দা কলেজছাত্রী মেহের আফরোজ (২৩) বলেন, ‘নান্দনিক এই ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ আমাদের কাছে বঙ্গবন্ধু ও সোহরাওয়ার্দীর সাক্ষাতের ইতিহাস জানান দিচ্ছে। কিন্তু এই স্মৃতিসৌধটিকে বিদ্যুতের তার, খুঁটি, ট্রান্সফরমার বিশ্রীভাবে ঘিরে রখেছে। এতে স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্যে হানি ঘটাচ্ছে। তাই দ্রুত এগুলো অপসারণ করতে হবে।’

জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা খোন্দকার এহিয়া খালেদ সাদী বলেন, এ স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের জন্য দুই নেতার অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে জানান দিচ্ছে। কিন্তু এই স্মৃতিসৌধ ঘিরে রেখেছে বিদ্যুতের তার, খুঁটি ও ট্রান্সফরমার। এ কারণে এই স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। এগুলো দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

গোপালগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রায় ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ২০৭ টাকা ৬৫ পয়সা ব্যয়ে আমরা এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করেছি। বিদ্যুতের তার ও খুঁটি স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। আমরা এগুলো সরিয়ে নিতে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় দাবি জানিয়েছি।

গোপালগঞ্জ বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই খুঁটি, তার ও ট্রান্সফরমার স্মৃতিসৌধ এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে এরই মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।