- সারাদেশ
- ‘নির্বাচন করতে আমাকে এখানে এনেছেন মন্ত্রী’
চারঘাট থানার ওসির অডিও ফাঁস
‘নির্বাচন করতে আমাকে এখানে এনেছেন মন্ত্রী’

রাজশাহীর চারঘাট মডেল থানার ওসি মাহবুবুল আলমকে পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এক গৃহবধূর কাছে তিনি সাত লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছেন– এমন অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর গত শনিবার রাতে তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়। রোববার রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ও মিডিয়া সেলের মুখপাত্র রফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঘুষ চাওয়ার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ গত শনিবার বিকেলে রাজশাহীর পুলিশ সুপারের কাছে দেন ওই নারী। এর সঙ্গে ঘুষ চাওয়ার ৬ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের কথোপকথনের একটি রেকর্ড সংযুক্ত করা হয়। একই অনুলিপি সরাসরি ও ডাকযোগে পুলিশের আইজি, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির কাছেও পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ দেওয়া নারীর নাম সাহারা খাতুন। তিনি চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের চামটা গ্রামের আব্দুল আলিম কালুর স্ত্রী।
অভিযোগপত্রে সাহারা বলেন, তাঁর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ ও র্যাবের সোর্স হিসেবে কাজ করেন। চারঘাট এলাকায় তাঁর স্বামীর দেওয়া তথ্যে অনেক মাদক কারবারিকে র্যাব ও পুলিশ আটক করেছে। এতে তাঁর স্বামী ও পরিবারের ওপরে চারঘাটের মাদক ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়। তাঁর স্বামীকে মাদক ও অস্ত্র দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে চারঘাট থানায় মুক্তা, সাব্বির ও শুভর (মাদক চোরাকারবারি) বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে গেলে ওসি মাহবুবুল আলম অভিযোগ না নিয়ে ব্যক্তিগত কক্ষে নিয়ে যান। এ সময় সাহারার সঙ্গে তাঁর ছেলে ছিল। তখন ওসি মাহবুবুল বলেন, ‘মুক্তা, সাব্বির ও শুভর বিরুদ্ধে অভিযোগ নেওয়া যাবে না। এদের আমি নিজেই মাদক ব্যবসা করাচ্ছি। তাদের গ্রেপ্তার করাও যাবে না। ২ লাখ টাকা দিতে পারলে ওদের অস্ত্র বা মাদক দিয়ে মামলা দেব।’ এ সময় হুমকি দিয়ে ওসি বলেন, ‘নির্বাচন করতে মন্ত্রী আমাকে গাইবান্ধা থেকে এখানে নিয়ে এসেছেন। আমি তাঁর কথা ছাড়া কারও কথা শুনি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫ লাখ আর ২ লাখ– ৭ লাখ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করো। আতিক বাদ, ওই দুইজনকে (মুক্তা ও শুভ) ট্যাকেল দেওয়ার দায়িত্ব আমার। নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে মন্ত্রীকে বলে ওই দুইজনকে ধরে অ্যারেস্ট করে চালান করে দেব।’
অডিওর বিষয়ে ওসি মাহবুবুল বলেন, ‘অডিও রেকর্ডটি আমি এখনও শুনিনি। তবে যে ধরনের অভিযোগের কথা বলছেন, সে ধরনের কথা ওই নারীর সঙ্গে আমার হয়নি।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম বলেন, ওই নারীর লিখিত অভিযোগ তাঁরা এখনও হাতে পাননি। অভিযোগের সঙ্গে দেওয়া অডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সে জন্য তদন্তের স্বার্থে ওসি মাহবুবুলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন