যৌথ অভিযানে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়ন থেকে ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

সোমবার ভোরে ভাঙ্গার আজিমনগর ইউনিয়ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ হেডকোয়াটার্স, এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) ও ফরিদপুর জেলা পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে।

এদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) পুলিশ সুপার ফারহানা ইয়াসমিন। এ সময় ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আব্দুল্লা বিন কালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সালাহউদ্দিন, ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল বাগবাড়ী দিঘীরপাড় গ্রামের সাকিল মাতুব্বর ওরফে শাকিব (২৭), একই গ্রামের শরিফুল মৃধা (৩৭), পাতরাইল দিঘীরপাড় গ্রামের মো. শাওন শেখ (২০), মধ্য পাতরাইল কবিরাজ বাড়ী গ্রামের রাকিব কবিরাজ (২৫) ও পাতরাইল উথলী তালুকদার বাড়ী গ্রামের মো. জাকির হোসেন তালুকদার (৩৮)। 

লিখিত বক্তব্যে এটিইউয়ের পুলিশ সুপার ফারহানা ইয়াসমিন জানান,  চক্রটি শুরুতে বিভিন্ন সরকারি ভাতা, অনুদান ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদানকারী ব্যক্তির তালিকা, মোবাইল নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য অনলাইন হতে সংগ্রহ করে। এরপর সরকারি ভাতা, অনুদান, শিক্ষাবৃত্তি প্রদানকারী দপ্তরের উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তার পরিচয়ে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মোবাইলে ফোন করে। পরে ওই ব্যক্তির নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি তথ্য দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করে। এরপর চক্রটি জানায়, ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা প্রেরণ করলে সময় বেশি লাগবে, তবে ডেভিট বা ক্রেডিট কার্ড যদি থাকে তাহলে তৎক্ষণাৎ প্রেরণ করা যাবে। ফলে ভুক্তভোগী প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড নম্বর এবং ওপিটিসহ সকল গোপন তথ্য প্রদান করে। পরবর্তীতে প্রতারক খুব সহজেই ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা ‘কিউপে বাংলাদেশ’ নামক মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যাংক একাউন্ট, বিকাশ বা নগদ একাউন্টে ট্রান্সফার করে নেয়। 

অভিযানের বর্ণনা দিয়ে এটিইউয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আখিউল ইসলাম বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার ভোরে যৌথভাবে প্রতারক চক্রের ওই পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু সিম জব্দ করা হয়। এছাড়াও মোবাইলগুলোতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস পাওয়া গেছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানান, গত ৫ থেকে ৬ মাসে তারা ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হবে। এরপর তদন্ত পরিচালনা করবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম বলেন, আসামিদের আগামীকাল মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।