- সারাদেশ
- আলুর শেড ফাঁকা হিমাগার ভরপুর
আলুর শেড ফাঁকা হিমাগার ভরপুর
-copy-samakal-650896bb498e2.jpg)
ছবি-সমকাল
সরকারের বেঁধে দেওয়া দরে হিমাগারগুলোতে আলু বিক্রি হচ্ছে কিনা তা তদারক করছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা। এ অবস্থায় গত রোববার বিকেলে জেলার বিভিন্ন হিমাগারে আলু বেচাকেনা চলেছে। বন্ধ ছিল কালাই পৌর শহরের নরওয়েস্ট হিমাগার।
৮৫ হাজার বস্তা ধারণক্ষমতা আছে জয়পুরহাটের কালাইয়ের এ হিমাগারের। আলুর শেড এদিন ফাঁকা ছিল। মূল ফটকে ঝুলছিল তালা। অথচ এখনও হিমাগারটিতে মজুত রয়েছে ৩৬ হাজার ৭০০ বস্তা আলু। এমন দৃশ্য দেখে হতবাক বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।
হিমাগারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা যদি আলু বিক্রি না করেন তাহলে হিমাগার কর্তৃপক্ষের কী করার আছে? তারা সর্বোচ্চ ব্যবসায়ীদের তালিকা দিতে পারেন। এর বাইরে কিছু করার নেই। ভোক্তা অধিকার বলেছে, দু-একদিনের মধ্যে বেঁধে দেওয়া দরে আলু বিক্রি শুরু করতে হবে। তা না হলে হিমাগার সিলগালা করে নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি করে ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে হিমাগার গেটে পাইকারি ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে আলু কেনাবেচা হচ্ছে। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। এ অবস্থায় সরকার হিমাগার গেটে আলু পাইকারি সর্বোচ্চ ২৭ টাকা কেজি বিক্রির জন্য দর বেঁধে দেয়। কিন্তু তা মানছেন না ব্যবসায়ীরা।
এমনকি প্রশাসন বাজার তদারকি জোরদার করায় হিমাগারগুলোয় আলু কেনাবেচা বন্ধ রয়েছে। গত রোববার বিকেলে বগুড়া আঞ্চলিক ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইফতে খারুল আলম কালাইয়ের কয়েকটি হিমাগারে তদারক করতে যান। এ সময় নরওয়েস্ট হিমাগারে আলু কেনাবেচা বন্ধ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, গত বছরের লোকসানের ভার থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। ব্যাংকের ঋণ জট বেঁধে আছে। তখন সরকার এগিয়ে আসেনি। এখন ব্যবসায়ীরা লাভ করছেন বলে কারও সহ্য হচ্ছে না। সবাই উঠেপড়ে লেগেছে। প্রশাসনের চাপাচাপির কারণে ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। তা ছাড়া হিমাগারে আলু সংরক্ষণের সময়ও আছে। শেষ পর্যন্ত কী ঘটে তা দেখতে অপেক্ষা করবেন তারা।
নরওয়েস্ট হিমাগারের ব্যবস্থাপক মুক্তার হোসেন বলেন, ৮৫ হাজার বস্তা ধারণক্ষমতা থাকলেও রোববার বিকেল পর্যন্ত সংরক্ষণ ছিল ৩৬ হাজার ৭০০ বস্তা আলু। বেচাকেনা বন্ধ এবং শেড ফাঁকা থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেদিন দর বেঁধে দেওয়া হয়েছে সেদিন থেকেই এ অবস্থা। ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি না করলে তাদের কিছু করার নেই। বিক্রি বন্ধ থাকায় শেড ফাঁকা। সংরক্ষণের মেয়াদ আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত। সে কারণে ব্যবসায়ীদের চাপ দিতে পারছেন না।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে আলুর দাম এত বেশি। হিমাগারগুলোয় পর্যাপ্ত আলু সংরক্ষিত আছে, এমন তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। সরকার নির্ধারিত ২৭ টাকা কেজির বিপরীতে বেশি দরে বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইফতে খারুল আলম জানান, প্রথম পর্যায়ে জরিমানাসহ তাদের সতর্ক করা হচ্ছে। নরওয়েস্ট হিমাগারকে সতর্ক করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংরক্ষণ করা আলু ব্যবসায়ীদের তালিকা চেয়েছেন। এরপর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন