- সারাদেশ
- ডাকাতিয়া নদী পাড়ে হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে
ডাকাতিয়া নদী পাড়ে হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে

ছবি: সমকাল
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়ায় ডাকাতিয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুর পাশে ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ের কাজ শেষ হলে জায়গাটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে। নির্মাণকাজ চলাকালেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন লোকজন। কেবল স্থানীয়রাই নন, প্রায় প্রতিদিনই চাঁদপুর শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরের এই ওয়াকওয়ে দেখতে ভিড় করেন। পাশের উপজেলা হাজীগঞ্জ ও কচুয়ার লোকজনও দেখতে আসছেন ওয়াকওয়েটি।
জানা গেছে, নদীর তীরে কংক্রিটের ব্লক বিছিয়ে পরিবেশবান্ধব ওয়াকওয়ে করার উদ্যোগ নেন সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধের ১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম। ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ওয়াকওয়ের নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এই ওয়াকওয়ে সম্পূর্ণ যানবাহন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। এখানে বিনোদন পার্ক, আধুনিক রেস্টুরেন্ট ব্যবস্থা ও পার্ক ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। তা ছাড়া পর্যটকদের নদীতে প্যাডেলচালিত নৌযানও থাকছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, নির্মাণকাজ শেষ করতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। ডাকাতিয়া নদী পাড়ে বাঁধ দিয়ে সূচিপাড়া সেতু থেকে ছিখটিয়া সেতু পর্যন্ত ওয়াকওয়ের কাজ চলছে। দুই পাশে রেলিং দিয়ে ওয়াকওয়ে এবং কিছুটা দূরত্ব রেখে নদীমুখে করা হয়েছে বসার স্থান। ওয়াকওয়ে এলাকায় লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন জাতের গাছের চারা। ওয়াকওয়ে ঘিরে জমির দামও বেড়ে যাচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
ওয়াকওয়ে এলাকায় ঘুরতে দেখা গেছে চাঁদপুর সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে। তাদের মধ্যে মাহী ও নিহা জানান, চাঁদপুরে তিন নদীর (পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া) মিলনস্থল ছাড়া চাঁদপুর শহরে বেড়াবার কোনো জায়গাই নেই। ওই জায়গাও এখন হকারদের দখলে। তাই ডাকাতিয়া নদীর তীরে নির্মাণাধীন ওয়াকওয়ে দেখতে ছুটে এসেছেন তারা। এই জায়গাটি অনেক সুন্দর বলে দাবি তাদের।
ওয়াকওয়ে দেখতে আসা দন্তচিকিৎসক মাসুদ হাসান বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ওয়াকওয়ে নির্মাণের খবর দেখলাম। এর পরই মনে হলো একটু ঘুরে দেখে আসি। এটির কাজ শেষ হলে শাহরাস্তি উপজেলার চিত্র পাল্টে যাবে।’
কবে নাগাদ কাজ শেষ হতে পারে, সে বিষয়ে জানতে কথা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একাংশের স্বত্বাধিকারী আজিজ ব্রাদার্সের মো. আজিজের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, আগামী ৯ অক্টোবর এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম।
নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পথে বলে দাবি করেছেন শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হুমায়ুন রশিদ।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বরে ওয়াকওয়ের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এতে ভূমি অধিগ্রহণের অর্থসহ প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।
মেজর (অব.) রফিক ইসলাম বীরউত্তম বলেন, ‘আমি এই আসনের চারবারের সংসদ সদস্য। মন্ত্রীও ছিলাম। সেক্টর কমান্ডার ছিলাম, অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। তবে জনগণের মাঝে আমার স্মৃতি ধরে রাখতে এই ওয়াকওয়ে করে গেলাম।’
মন্তব্য করুন