ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

বন্ধ চালকলে এক লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল!

বন্ধ চালকলে এক লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল!

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৪:৪৯ | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৪:৪৯

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের হাজী তসক উল্লাহ রাইস মিলটি বছরে তিন মাস বন্ধ থাকে। সেই তিন মাসের বিল এসেছে এক লাখ টাকা। এ ছাড়া গত ছয় বছরে গড়ে ছয় লাখ করে মোট ৩৬ লাখ টাকা বিল এসেছে। 

ভূতুড়ে এ বিলের বিষয়ে বার বার অভিযোগ দেওয়ার পরও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানে কালক্ষেপণ করতে থাকে। উল্টো গত বছর অক্টোবর মাসে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। 

এদিকে ভৌতিক বিল নিয়ে সমস্যা ও বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় মিল বন্ধ রাখতে হয়েছে। এসব কারণে সরকারের সঙ্গে খাদ্যগুদামে চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ করতে পারেননি মিল মালিক। মিলের লাইসেন্স কালো তালিকাভুক্ত করেছে সরকার। 

২০১৫ সালে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব ইনাতগঞ্জ বাজারে হাজী তসক উল্লাহ অটো রাইস মিলস প্রতিষ্ঠা করা হয়। অর্ধশতাধিক শ্রমিক এ মিলে কাজ করছেন। প্রতি বছর মেশিন সংস্কারের জন্য তিন মাস মিল বন্ধ রাখা হয়। ২০২২ সালের আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসেও মিল বন্ধ থাকে। এরপরও এ তিন মাসে ১ লাখ টাকা বিল আসে। এখানেই শেষ নয়, গত ৬ বছরে মিলে ভূতুড়ে বিল এসেছে ৩৬ লাখ টাকা। 

ভৌতিক বিলের ব্যাপারে মিলের পরিচালক আমিনুর রহমান তিন দফা ইনাতগঞ্জ সাব-জোনাল অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন। অফিস থেকে লোকজন মিল পরিদর্শন করে জানায় পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভমেন্ট (পিএফআই) লাইনে সমস্যা রয়েছে। তবে দক্ষ ইলেকট্রিশিয়ান পরীক্ষা করে পিএফআই লাইনে সমস্যা পাননি। এরপর পল্লী বিদ্যুতের ইনাতগঞ্জ অফিসে অভিযোগ দিলে তাদের লোক এসে জানান মিটার থেকে মেশিনের লাইনের দূরত্ব বেশি। তাই অতিরিক্ত বিল আসছে। দূরত্ব কমাতে মিটার, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ট্রান্সমিটার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন তারা। মিল কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর মিলের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পল্লী বিদ্যুৎ। এরপর ১৫ দিনের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে ১ লাখ টাকা জমা দিয়ে পুনঃসংযোগের আবেদন করা হলেও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। 

মিলের পরিচালক আমিনুর রহমান জানান, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিতে চুক্তি অনুযায়ী জেলা খাদ্যগুদামে তিন কোটি টাকার চাল দিতে তিনি ব্যর্থ হন। সরকার জামানতের ১০ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করে মিলটিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন শতাধিক শ্রমিক। একের পর এক ক্রেতা চলে যাচ্ছে। কারখানা বন্ধ থাকার পরও বার্ষিক চুক্তিতে থাকা ২ জন ম্যানেজার, ২ জন মেশিন চালক, ৭ জন বেতনভুক্ত শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করতে হচ্ছে। এত ক্ষতি মেনে নেওয়া যায় না। তিনি মামলা করবেন।

কথা হলে ইনাতগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের এজিএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, লাইনের সমস্যা থাকায় অতিরিক্ত বিল এসেছে। লাইন পুনঃসংযোগে বিলম্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে অনুমোদন পেতে দেরি হওয়ায় এক বছর সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। 

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে কাগজপত্র দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন