ইউরেনিয়াম সাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০
দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর আগামী বছর উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে এ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান দেশে পৌঁছেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এ জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে রূপপুর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। যদিও তেজস্ক্রিয় জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়ামের ঝুঁকি নিয়ে নানা মহলে আলোচনা রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক প্রযুক্তি ও নির্মাণ কৌশলের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়ামের ব্যবহার দিন দিন নিরাপদ হয়ে উঠছে। এ ছাড়া ইউরেনিয়াম আর্থিক দিক দিয়ে কয়লা ও জ্বালানি তেলের চেয়ে সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব। জীবাশ্ম জ্বালানির চেয়ে ইউরেনিয়ামের জ্বলন শক্তি বেশি। এক কেজি ইউরেনিয়ামের জ্বালানি সক্ষমতা ৬০ টন ডিজেল ও শত টন কয়লার সমান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম জানান, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালাতে ৭৫ টন ইউরেনিয়াম প্রয়োজন হতে পারে। তবে ১৮ মাস পরপর প্রতিস্থাপন করতে হবে এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ২৫ টন ইউরেনিয়াম। সেই পরিমাণ ব্যয়িত জ্বালানির রড চুল্লি থেকে তুলতে হবে। এই পরিমাণ জ্বালানি দিয়ে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে যুক্ত হবে ১ হাজার ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ৬০ বছর ধরে ১৮ মাস পর পর মাত্র দুই মাসের মতো বন্ধ রাখা ছাড়া (নতুন জ্বালানি ভরা, ব্যয়িত জ্বালানি তোলা এবং অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণ কাজ) বাকি সময়টুকুতে নিরবচ্ছিন্নভাবে চুল্লি জ্বলতে থাকবে। অথচ এই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ১৮ মাস পর পর প্রায় এক কোটি টন কয়লা, ১৯ কোটি গ্যালন ডিজেল লাগত। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী এই পরিমাণ কয়লা ও তেল কিনতে লাগবে ৭ হাজার ৩০০ ও ৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু ২৫ টন ইউরেনিয়ামে ব্যয় হবে মাত্র হাজার কোটি টাকা।
ড. শফিক বলেন, ‘কয়লা ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কার্বন সালফার নির্গমনের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি করে যাচ্ছে। এ জন্যই পারমাণবিক শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন দীর্ঘমেয়াদি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব।’- বিষয় :
- ইউরেনিয়াম
- রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র