ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আ’লীগে কোন্দল প্রকাশ্যে, চলছে কথার লড়াই

আ’লীগে কোন্দল প্রকাশ্যে, চলছে কথার লড়াই

ছবি-সংগৃহীত

মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ২৩:১৬ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১৯:০১

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। চেয়ারম্যান পদে ছয় প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কথার লড়াই। 

আগামী ৮ মে নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত সোমবার শেষ দিনে ছয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা হলেন– উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রোমা আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ টি এম মনিরুজ্জামান সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ ফজলে ইয়াজ আল হোসাইন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কুমার রায়, আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রমোদ রঞ্জন সূত্রধর। ভোটের মাঠে আছেন কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ওমরাও খান। 

 আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী জানান, দ্বাদশ  সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা রোমা আক্তার,  মনিরুজ্জামান সরকার, প্রদীপ কুমার রায় ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সৈয়দ ফজলে ইয়াজ আল হোসাইন নৌকার প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। 

ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অসিম কুমার পাল বলেন, নাসিরনগরে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেননি। যারা অংশ নিয়েছেন, তারা সবাই খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা ও বিএনপি নেতা একরামুজ্জামানের লোক ও সমর্থক। তারা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে একরামুজ্জামানের পক্ষে কাজ করেছেন। 

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী রোমা আক্তার। তিনি বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে আমি নৌকার নয়, স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির বিপক্ষে কাজ করেছি। 

জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি বলেন, নাসিরনগর আওয়ামী লীগ এখন অভিভাবকশূন্য। কেউ কারও কথা শুনছে না। অন্য দল থেকে নেতা টেনে এনে আওয়ামী লীগ চলতে পারে না। যারা সারাজীবন আওয়ামী লীগ করেছেন, তাদের মধ্য থেকে নেতৃত্ব খুঁজে বের করতে হবে। 
এদিকে দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন বয়কট করেছে বিএনপি। এর পরও নাসিরনগর উপজেলা বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান পদে একজন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দু’জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তারা নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ভোটের হিসাব অনেকটাই পাল্টে যাচ্ছে বলে মত সাধারণ ভোটারদের। তবে মাঠে নেই জামায়াত ও জাতীয় পার্টির কোনো নেতাকর্মী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের পাঁচজন প্রার্থী হওয়ায় তাদের ভোট ভাগ হবে। সাবেক সংসদ সদস্য সংগ্রাম কাউকে সমর্থন করেননি। বর্তমান সংসদ সদস্য একরামুজ্জামানও কাউকে সমর্থন করছেন না। প্রয়াত মন্ত্রী ছায়েদুল হকের সমর্থকরাও প্রকাশ্যে কাউকে সমর্থন করছেন না। তিন পক্ষের ভোট আওয়ামী লীগের পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে ভাগ হবে। 

জানতে চাইলে বিএনপির প্রার্থী ওমরাও খান বলেন, এবার  প্রতীকে ভোট হবে না। তাই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। 
জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন তুহিন বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেউ প্রার্থী হলে কিংবা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো কাজে অংশ নিলে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।
সংসদ এস একে একরামুজ্জামান বলেন, ‘গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আমার পক্ষে সবাই কাজ করেছেন, তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচেন কাউকে সমর্থন করে কারও পক্ষে কাজ করছি না। জনগণ যাকে ভোট দেবেন, তিনিই নির্বাচিত হয়ে আসবেন। যেহেতু দলীয় কোনো প্রতীক নেই, তাই একাধিক প্রার্থী হওয়াও স্বাভবিক।

আরও পড়ুন

×