ঢাকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি, অতপর প্রসূতির মৃত্যু

পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি, অতপর প্রসূতির মৃত্যু

আফসানা হোসেন শীলা

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১৮:৩১

কক্সবাজার শহরে ইউনিয়ন হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় আফসানা হোসেন শীলা (২৮) নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তিনি কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের কন্যা। 

বুধবার রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আইসিউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

প্রসূতির স্বামী ইফতেখার উদ্দিন জানান, তার স্ত্রীকে গত ২১ এপ্রিল রাতে পেট ব্যথা হওয়ায় কক্সবাজার শহরের হাসপাতাল সড়কস্থ ইউনিয়ন হাসপাতালে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নীনা জিহানের প্রাইভেট চেম্বারে নিয়ে যান। এরপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওই হাসপাতালে ব্লাড দেওয়া হয়। ব্লাড দেয়ার পরপরই অসুস্থতা বোধ করেন। পরে ডা. নীনা জিহানের পরামর্শ অনুযায়ী ইউনিয়ন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাহেদ তার স্ত্রীকে ভর্তি করান।

তিনি জানান, ভর্তি করার পর পরই তার শরীরে ইনজেকশন পুশ করা হয়। ইনজেকশনটি পুশ করার কিছুক্ষণ পরেই তার স্ত্রীর প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। পরে ২২ এপ্রিল রাত ২টা সময় জানানো হয় তার স্ত্রীকে ডেলিভারির জন্য রক্তের ব্যবস্থা করতে, এক ব্যাগ রক্ত চালানোর পর একটি স্যালাইন দেয়া হয়। পরবর্তীতে রাত সোয়া ৩টার সময় ডাক্তার শাহেদ এবং হিমু ও সোমা নামে দুজন নার্স নিয়ে তার স্ত্রীকে ডেলিভারি করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। ডেলিভারিতে তার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। 

পরবর্তীতে ডাক্তাররা জানান, তার স্ত্রীর ব্লিডিং বন্ধ করা যাচ্ছে না। পরে ডাক্তার নীনা জাহানকে ইউনিয়ন হাসপাতাল থেকে বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি সদর হাসপাতালের ডিউটিতে আছি, রোগীকে সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।’ আমার স্ত্রীকে সদর হাসপাতালে আনার পর তিনি আইসিইউতে প্রেরণ করেন। এরপর বুধবার রাতে তার স্ত্রীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। 

এ ঘটনায় বুধবার রাতে ইউনিয়ন হাসপাতাল ঘেরাও করে নিহতের স্বজনরা। ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যাওয়ায় ভুয়া ভুয়া বলে হৈ-হুল্লোড় করে সাধারণ জনতা। তাৎক্ষণিক পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

রোগীর স্বজনেরা জানান, ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা করে আফসানাকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছে। আমাদের মেয়ের মৃত্যুর দায় ইউনিয়ন হাসপাতালকে নিতে হবে। তারা আরও জানান, আফসানার ডেলিভারির তারিখ ছিল ৬ মে। টাকার লোভে আগাম ডেলিভারি করাতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছ ডাক্তার এবং নার্সরা।

অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে ইউনিয়ন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তানিম গণমাধ্যমকে বলেন, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর নরমাল ডেলিভারি হয়, পরে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য স্বজনরা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান এবং ওখানেই তার মৃত্যু হয়। এখানে ডাক্তার কিংবা নার্সের কোন গাফিলতি ছিল না।

আরও পড়ুন

×