উপজেলা নির্বাচন: হলফনামা বিশ্লেষণ
আ’লীগ নেতা মুজিবরের আয় বেড়েছে ৬ গুণ
কক্সবাজার
মুজিবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪ | ০০:৩৫ | আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ | ১১:৫৮
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের বার্ষিক আয় ৬০ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯৮ টাকা। ২০১৮ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৪৪০ টাকা। এ হিসাবে ৬ বছরের ব্যবধানে তাঁর বার্ষিক আয় বেড়েছে ৬ গুণেরও বেশি। এমনকি ২০১৮ সালে তাঁর স্ত্রী ফারহানা আকতারের নামে ১৩ ভরি স্বর্ণ দেখালেও বর্তমানে কোনো স্বর্ণ নেই বলে উল্লেখ করেছেন। শুধু তাই নয়, নিজের পেশাও পরিবর্তন করে ফেলেছেন আওয়ামী লীগের এ নেতা। ২০১৮ সালের হলফনামায় পেশা জেনারেল মার্চেন্টাইস উল্লেখ করলেও ২০২৪ সালের হলফনামায় উল্লেখ করেছেন ডেইরি ফার্ম ও ফিশিং বোটই তাঁর পেশা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্প্রতি জমা দেওয়া এবং ২০১৮ সালে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে জমা দেওয়া দুই হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব জানা গেছে।
মুজিবুর রহমান কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র এবং কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে কক্সবাজার উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে এক বছর আগে অনুষ্ঠিত কক্সবাজার পৌর নির্বাচনে দলের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন চেয়ে পাননি।
হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মুজিবুর রহমানের বর্তমানে নগদ টাকা রয়েছে ৩৩ লাখ। কৃষি খাত থেকে তিনি বার্ষিক আয় করেন ৩২ হাজার এবং বাড়ি ভাড়া থেকে পান ১৪ লাখ ১২ হাজার ৭০০ টাকা। ব্যবসায় তাঁর বার্ষিক আয় ৪০ লাখ ২০ হাজার। ফার্ম থেকে আয় ৩৭ হাজার এবং নির্ভরশীলদের আয় ৭২ হাজার টাকা। অথচ ২০১৮ সালে নগদ ছিল ৩ লাখ ৮০৯ টাকা।
কৃষি খাত থেকে তিনি বার্ষিক আয় করতেন ৩২ হাজার, বাড়ি ভাড়া থেকে পেতেন ১ লাখ ৯০ হাজার ৪৪০ টাকা। ব্যবসায় তাঁর বার্ষিক আয় হতো ২ লাখ ১৩ হাজার। মৎস্য খামার থেকে তাঁর আয় ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে মুজিবুর রহমানের নিজের নামে ৭ লাখ টাকার দশমিক ২২ একর জমি, ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার ১ দশমিক ৫১ একর ও ৫৬ হাজার টাকার ১৪ শতক কৃষিজমি রয়েছে। অকৃষি জমি রয়েছে ১৬ লাখ ৭৪ হাজার টাকার দশমিক ৬ একর, ১ লাখ ১০ হাজার টাকার ১০ শতক, ১ লাখ ৯৪ হাজার ৯১৯ টাকার ১ দশমিক ১৫ একর এবং ৩৬ লাখ টাকার ২ একর ৪০ শতক জমি রয়েছে।
২০২১ সালের একটি মামলার আসামি তিনি। তাঁর কোনো দায় ও ঋণ নেই। ২০১৮ সালে তাঁর কৃষিজমি ছিল ১ দশমিক ৫১ একর, অকৃষিজমি ছিল সাড়ে ৩৬ শতক। মামলা ছিল ৫টি। এর মধ্যে চারটি নিষ্পত্তি এবং ১টি খারিজ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মুজিবুর রহমান।
এইচএসসি পাস মুজিবুর রহমানের বর্তমানে ৮১ লাখ ৩০ হাজার টাকার ১৩ শতক জমির ওপর দালান, ২১ লাখ টাকার ১১ শতক জমির ওপর বাড়ি, ১০ লাখ টাকার এগ্রো ফার্ম, ৪ লাখ টাকার ফিশারি প্রজেক্ট এবং ৫ লাখ টাকার পেট্রোল পাম্প রয়েছে। অথচ ২০১৮ সালে হলফনামায় বলেছেন, ২০ শতক জমির ওপর সেমিপাকা ঘর, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দ্বিতলবিশিষ্ট বাড়ি, মৎস্য খামার এবং পেট্রোল পাম্প ছিল। তবে ওই সময় টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেননি তিনি।
- বিষয় :
- উপজেলা নির্বাচন
- কক্সবাজার