যবিপ্রবিতে রাতভর শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে কমিটি
৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

ফাইল ছবি
যশোর অফিস
প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৪ | ২১:০৬
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) আবাসিক হলে শিক্ষার্থী শাহরীন রহমানকে তুলে নিয়ে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রক্টর অধ্যাপক হাফিজ উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়।
উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এর পর আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন বলেন, আমরা বিষয়টি অবগত। লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহরীন রহমান প্রলয় (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ওই ছাত্রাবাসের বাসিন্দা।
বিশ্ববিদ্যালয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার ক্যাম্পাসে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে শাহরীনকে মারধর করেন তাঁর বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী হিসেবে পরিচিত শাহীনুর রহমান। এই ঘটনায় শাহীনুরের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দেন শাহরীন। ঘটনার জেরে মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে ছাত্রাবাসে ঘুমিয়ে থাকা শাহরীনকে ডেকে তুলে ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর ও রড দিয়ে পেটানো হয়। রাত ২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ভুক্তভোগীর ওপর দফায় দফায় চলে নির্যাতন। কেড়ে নেওয়া হয় শাহরীন ও তাঁর কক্ষের সহপাঠী আমিনুল ইসলামের ফোন। বুধবার সকালে তিনি গ্রামের বাড়ি চলে যান। দুপুরে তাঁর মায়ের মোবাইল ফোনে বিষয়টি যাতে কাউকে না জানানো হয় বলে হুমকি দেওয়া হয় অজ্ঞাত নম্বর থেকে। এমনকি এ বিষয়ে কাউকে জানালে বোমা মেরে বাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয় দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহরীন বলেন, সভাপতির কক্ষে ডেকে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আশিকুজ্জামান লিমন, ইসাদ, রায়হান রহমান রাব্বি, বেলাল হোসেন, শেখ বিপুল, রাইসুল হক রানাসহ প্রায় ১০-১৫ জন অতর্কিত মারধর শুরু করে। এ সময় কক্ষের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ি। তখন তারা আমাকে লাথি মারতে থাকে। আমার মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয়। এক পর্যায়ে তারা আমাকে রড দিয়ে পেটাতে শুরু করে। ভোর ৫টা পর্যন্ত চলে দফায় দফায় এমন নির্যাতন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহরীন বলেন, আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এই ঘটনায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ছাত্রলীগের বিভিন্ন পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে আমার নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ঘটনার দিন আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না।