ঢাকা রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

টিনের কক্ষে স্বাস্থ্যসেবা ভোগান্তি স্থানীয়দের

টিনের কক্ষে স্বাস্থ্যসেবা ভোগান্তি স্থানীয়দের

দখলে সংকীর্ণ হয়ে গেছে টোক উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রবেশপথ। ছবিটি সম্প্রতি তোলা সমকাল

 কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪ | ০১:০২

জরাজীর্ণ পরিবেশে চলছে গাজীপুরের কাপাসিয়ার টোক উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। ৫৩ বছর ধরে টিনের একটি কক্ষেই চলছে চিকিৎসাসেবা। এ ঘরের মাঝখানে অস্থায়ী বেড়া দিয়ে দুটি আলাদা স্থানে বসেন একজন চিকিৎসক ও একজন ফার্মাসিস্ট। উপজেলার টোক বাজারের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এ কেন্দ্রের প্রবেশপথও স্থানীয় লোকজনের দখলে। ফলে সেবা নিতে আসা লোকজনকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। 

টোক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আমানউল্লাহ ভূঁইয়ার ভাষ্য, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী টোক বাজারে আগুন দেয়। এ সময় পুড়ে যায় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুরোনো ভবনটি। ১৯৭২ সালে টিনের এক কক্ষের ঘরে স্থানান্তরিত হয় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। বর্তমান সরকারের আমলে দেশের সব জায়গায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও এখানে অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি।
এ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট নারায়ণ চন্দ্র সরকার বলেন, কাপাসিয়ার টোক, সিংহশ্রী ও বারিষাব ইউনিয়নের রোগীদের ভরসার জায়গা এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। এ ছাড়া পাশের ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার টাঙ্গাব, ডাকবাংলা, বারইহাটা, বটতলা, আঙ্গেদিসহ অন্তত ১৫টি গ্রাম; কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরটাঙ্গাব, মজিবপুর, বাহাদিয়া, এগারসিন্দুর, জামালপুর, মঠখোলাসহ অন্তত ১০টি গ্রামের রোগীরা প্রতিদিন এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। স্থান সংকুলানের অভাবে ও লোকবল না থাকায় সব রোগীকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। 
এখানে দিনে গড়ে ৮০ থেকে ১২০ রোগী আসেন। তার বেশির ভাগই নারী। অন্তত ২০-২৫ জন থাকে শিশু। এ তথ্য জানিয়ে কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. আজহারউদ্দিন বলেন, বিধি অনুযায়ী এখানে ৫টি পদ রয়েছে। কিন্তু তিনি ও একজন ফার্মাসিস্ট ছাড়া অন্যদের বসার জায়গা নেই। একজন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও সেটি শূন্য। একজন মিডওয়াইফ ও একজন এমএলএসএসের নিয়োগ রয়েছে। কিন্তু কাজের সুযোগ না থাকায় তারা ডেপুটেশনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ একজন মিডওয়াইফের অভাবে এই বিশাল এলাকার অন্তঃসত্ত্বারা স্বাভাবিক প্রসব ও গর্ভকালীন প্রাথমিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

স্থানীয় পল্লিচিকিৎসক মো. সলিমউদ্দিনের অভিযোগ, কেন্দ্রটি টোক-গফরগাঁও সড়কের প্রায় ১০০ ফুট দূরে। প্রবেশপথের দুই পাশের ঘর মালিকরা প্রায় সবটুকু জায়গা দখলে নিয়ে স্থাপনা তৈরি করেছে। কেন্দ্রে প্রবেশের জন্য মাত্র দেড়-দুই ফুট জায়গা রয়েছে। সেখান দিয়ে বেশি অসুস্থ রোগীদের আনা সম্ভব হয় না। 
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, কাপাসিয়া উপজেলায় দুটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। এর মধ্যে টোক উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিজস্ব কোনো স্থাপনা নেই। অথচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টোক ও আশপাশ এলাকার রোগীদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

আরও পড়ুন

×