ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিদ্যুৎ সংযোগে প্রতিবেশীর বাধা, অন্ধকারে বসবাস

বিদ্যুৎ সংযোগে প্রতিবেশীর বাধা, অন্ধকারে বসবাস

কুপির আলোতে কাজ করছেন দুলাল চন্দ্র

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪ | ০০:২৫

সন্ধ্যার পর আশপাশের বাড়িঘরে জ্বলে বিদ্যুতের আলো। কেবল ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকে দুলালের বাড়িতে। বাড়িটিতে কাজ চলে কুপি বাতি, মোমবাতির মিটিমিটি আলোয়। দুর্গাপুর পৌর শহরে বাড়ি হলেও বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত তিনি।
৭৫ বছর বয়সী দুলাল চন্দ্র সরকার নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার সাধুপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পেশায় একজন দর্জি। তাঁর অভিযোগ, প্রতিবেশীর বাধায় বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছেন না। কবে জ্বলবে তাঁর ঘরে বিদ্যুতের আলো তাও জানেন না। তবে মৃত্যুর আগে নিজ ঘরে বিদ্যুতের আলো দেখে যেতে চান তিনি।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে নিজ বসতঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে আবেদন করেন দুলাল চন্দ্র। আবেদনের পর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে যায়। কিন্তু প্রতিবেশীর বাধার কারণে সংযোগ দিতে পারেনি পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ। এরপর প্রতিবেশীর বাধা নিরসনের কথা জানিয়ে ২০২১ সালের ৯ আগস্ট ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বরাবর আবেদন করেন দুলাল চন্দ্র। সেই আবেদনের পরও সংযোগ দিতে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন পুনরায় তাঁর বাড়িতে যায়। ফের একই ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎ সংযোগ না দিয়েই ফিরে যেতে হয় তাদের। নিরুপায় হয়ে ২০২১ সালের ২২ আগস্ট একটি খুঁটির মাধ্যমে বিদ্যুৎ পেতে আবেদন করেন। এরপরও বিদ্যুৎ না পেয়ে আগের আবেদনটির দৃষ্টি আকর্ষণ করে ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লিখিতভাবে জানান। তবে আবেদনটি বাতিল হয়। যে কারণে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি দুলাল।
দুলাল চন্দ্র সরকার জানান, স্ত্রী ও এক মেয়ে নিয়ে অভাব-অনটনের সংসার ছিল তাঁর। মেয়ে সড়ক বাতির আলোতে পড়ালেখা করে এমএ পাস করেছেন। চার বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দর্জির কাজ করে সংসার চালাতে হিমশিম অবস্থা। দীর্ঘদিনের উপার্জনের টাকায় ছোট একটি ঘর করে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন। তবে তাঁর ঘরে বিদ্যুৎ নেই।
দুলাল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘সবার ঘরে বিদ্যুতের বাতি জ্বলে আমার ঘরে অন্ধকার। আমি কয়েকবার আবেদন করেছি। অনেকবার অফিসে গেছি, অনেক জায়গায় ঘুরেও বিদ্যুৎ পাইতেছি না।’  
বাধার বিষয়টি জানতে চাইলে প্রতিবেশী রিপন সরকার জানান, বাড়ির ওপর দিয়ে দুলাল চন্দ্র বিদ্যুতের তার নিতে চাচ্ছেন। ভবিষ্যতে তিনি পাকা বাড়ি করবেন, তখন সমস্যা হবে। বাড়িঘরের ওপর দিয়ে বিদ্যুতের তার নেওয়ার নিয়ম নেই।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দুর্গাপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ওই বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ৩-৪ বার লোক পাঠানো হয়েছে। সেখানকার লোকজনের বাধার জন্য সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। যেহেতু তিনি একটি খুঁটির নিদিষ্ট সীমানার ভেতরে আছেন সেখানে আরেকটি খুঁটি দেওয়া যায় না। তাই বাধা নিরসন করতে পারলেই ওই ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যাবে।

আরও পড়ুন

×