বসতঘর মেরামতে সহায়তা চান বন্যায় দুর্গতরা
কমলগঞ্জের আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ঘর সমকাল
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩:৫৬
কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের দিনমজুর আবুল কাসেম পরিবার নিয়ে মাটির দেয়াল দেওয়া একটি টিনের ঘরে বসবাস করতেন। সাম্প্রতিক বন্যায় ঘরটির তিন দিকের মাটির দেয়াল ভেঙে পড়েছে। বন্যার সময় অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিলেন। বর্তমানে চারদিক খোলা অবস্থায় ভয়ের মধ্যে রাতযাপন করছেন। বসতঘর মেরামতের মতো অর্থ নেই তাঁর। ঘর মেরামতে সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
একই গ্রামের আরেক ক্ষতিগ্রস্ত নিঃসন্তান সাবিহা বেগম (৪৫)। বন্যায় তাঁর মাটির ঘরটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি আত্মীয়ের বাড়িতে কয়েক দিন ধরে আশ্রয় নিয়েছেন। সামর্থ্য না থাকায় কীভাবে ঘরটি মেরামত করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। দিনমজুর আবুল কাসেম ও সাবিহা বেগমের মতো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আদমপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের অনেক দরিদ্র পরিবারই বসতঘর মেরামত নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলায় বন্যায় শতাধিক দরিদ্র পরিবারের বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলেও অনেকেই নিজ ঘরে উঠতে পারেননি। আবার কেউ কেউ খোলা ঘরেই রাতযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকে উপায় না পেয়ে আছেন স্বজনদের বাড়িতে। তারা ঘর সংস্কার করে বসবাসের উপযোগী করে তোলার জন্য সরকারি সহায়তা পাওয়ার আশা করছেন। আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও, ইসলামপুর ইউনিয়নের কোনাগাঁও, কুরমা, চাম্পারায় ও আলীনগর ইউনিয়নের আলীনগর, কামুদপুর, চিৎলিয়া ও মঙ্গলপুর গ্রামে বন্যাদুর্গতদের সংখ্যা বেশি।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের তাজ মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম ভাঙা মাটির ঘরের খাটের ওপর বসে আছেন। ঘরের চারপাশের মাটির দেয়াল ভেঙে পড়ে আছে। শুধু টিনের ছাউনি টিকে আছে। একই গ্রামের তাজউদ্দিনের স্ত্রী সাবিহা বেগমের একই অবস্থা। মাটির ঘরটি বিধ্বস্ত দেখা যায়। সাবিহা বলেন, তিনি কয়েক দিন ধরে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের সামর্থ্য নেই, কেউ ঘরটি মেরামতে সহযোগিতা করছেন না। তাঁর স্বামীও কোনো কাজ পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। এভাবে বনগাঁও গ্রামের সুন্দর মিয়া, রমজান আলীসহ আরও অনেকের ঘর সম্পূর্ণ বা আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।
ইসলামপুর ইউনিয়নের কোনাগাঁও, কুরমা, চাম্পারায় চা ঘুরে দেখা গেছে, অনেকের ঘরের বেড়া ভেঙে গেছে। কারও ঘরের মাটির দেয়াল ধসে পড়েছে। অনেকে আবার ভাঙা ঘরে কোনোমতে পর্দা টানিয়ে বসবাস করছেন।
আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন বলেন, আদমপুর ইউনিয়নে অনেকের বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছেন। বন্যায় দুর্গতদের জন্য সরকারি বরাদ্দ এলে দরিদ্র পরিবারগুলোকে সাহায্য করা হবে।
- বিষয় :
- বন্যা