ঢাকা রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বড়াইগ্রাম উপজেলা বিএনপি

কমিটির দ্বন্দ্বে গুলিবর্ষণ ভাঙচুর লুটপাট

গুলিবিদ্ধসহ আহত ৭, চার সদস্যের তদন্ত কমিটি

কমিটির দ্বন্দ্বে গুলিবর্ষণ ভাঙচুর লুটপাট

বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি দোকান

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৯:১৯

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সংঘর্ষে রাবার বুলেটে বিদ্ধসহ সাতজন আহত হয়েছেন। এ সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ১৪টি দোকান ও ৯টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। রোববার সন্ধ্যায় চান্দাই ইউনিয়নের দাসগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা বিএনপি।

আহতরা হলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপু, বিএনপি কর্মী মামুন হোসেন, সাগর আলী, মশিউর রহমান, জাহিদ আলী, মেহেদী হাসান ও আওয়ামী লীগ কর্মী শাহিন মালিথা। 

এদিকে ঘটনার পর দুই পক্ষই একে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছে। এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুর রহমানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। অন্য তিন সদস্য হলেন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আলিম ও আশরাফুল ইসলাম এবং গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাবুদ্দিন।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, কমিটি তদন্ত করছে। তবে অনেক আওয়ামী লীগার এখন বিএনপি সেজে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এদের শনাক্ত করাসহ জড়িত বিএনপির নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। 

সংঘর্ষের বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেছেন, সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের মধ্যে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা। কমিটি গঠনের পরদিন এর বিরোধিতা করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন হাবিবুর রহমানের সমর্থকরা। এ সময় উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করা হয়। 

সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপুর দাবি, শনিবার জনি নামে ছাত্রদলের এক কর্মীকে মারধর ও অফিস ভাঙচুর করেন হাবিবুর রহমান ও তাঁর লোকজন। রোববার সন্ধ্যায় শতাধিক লোক নিয়ে দাসগ্রাম বাজারে ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করেন। এ সময় হাবিবুর রহমানের ভাই সাইদুল ইসলাম ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকেন। লোকজন পালিয়ে গেলে দাসগ্রাম বাজার ও রাজেন্দ্রপুর কুদুর মোড়ের ১৪টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। পরে তাঁরসহ, সালেক আলী, ইউনুস আলী, আনিসুর রহমান, আব্দুল হান্নান, নুর নবী, খায়রুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জহুরুল মালিথার বাড়িঘর ভাঙচুর করে লুটপাট করা হয়। 

এ প্রসঙ্গে হাবিবুর রহমানের ভাষ্য, রবিউল ইসলাম টিপু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জহুরুল মালিথা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ সরদার, যুবলীগ নেতা হান্নান সরদার তাঁর দোকান ও যুবদলের কার্যালয় ভাঙচুর লুটপাট করেন। পরে তাঁর সমর্থকরা গিয়ে তাদের কিছু জিনিস ভাঙচুর করেছেন। 

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মী কেউ এলাকায় নেই। তাদের মধ্যে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব, আমাদের ওপর কেন দোষ চাপানো হচ্ছে?’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডলি রানী বলেন, ‘আহতদের মধ্যে একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনের শরীরে রাবার বুলেটের আঘাতের চিহ্ন আছে।’ 
 
বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক শাফিউল আযম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

আরও পড়ুন

×