ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে ৫শ হেক্টর ফসলি জমি

ম্যাপ
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩:৩৪
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আগাম শীতকালীন সবজি ও আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার শতাধিক মাছের খামার ডুবে গিয়ে বিপুল পরিমাণ চাষের মাছ ভেসে গেছে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন উপজেলার কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় প্রায় ৫শ হেক্টর জমির ফসল এখনও পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে আগাম শীতকালীন সবজি ও আমনের ক্ষতিই বেশি হয়েছে। কালীগঞ্জে গত শতকের ১৯৮৮ সালের বন্যার পর এবারই টানা বর্ষণে ক্ষতির পরিমাণটা বেশি বলে ধারণা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। তাদের ধারণা, ভারী বর্ষণের কারণে উপজেলার কৃষকদের ৫ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।
পৌরসভার নিশ্চিন্তপুর এলাকার সবজি চাষি সাইদুল ইসলাম বলছিলেন, চিত্রা নদীসংলগ্ন বর্গা নেওয়া ৪ বিঘা জমিতে তিনি সবজি, লাউ ও দেড় বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলেন। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে ক্ষেত তলিয়ে গিয়ে সব ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে।
একই এলাকার ড্রাগন চাষি সুমন জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান করেছিলেন। ভারী বর্ষণে জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় তাঁর বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রায়গ্রাম ইউনিয়নের আক্কাচ আলীসহ কয়েকজন কৃষক জানালেন, এলাকার অনেক কৃষকের আমন ক্ষেত এখনও পানির নিচে নিমজ্জিত। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে রায়গ্রাম, সিমলা রোকনপুর ও বারবাজার ইউনিয়নে ক্ষতির পরিমাণটা বেশি। কৃষি অফিসের প্রাথমিক জরিপে আমন ধান, সবজি, মাসকলাই, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজসহ অন্যান্য ফসলের প্রায় ৫শ হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত। কৃষকদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আপাতত কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে উপজেলার শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বিশেষ করে পৌরসভা এলাকা ও বারবাজার ইউনিয়নের মৎস্য খামারিদের বেশি ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে উপজেলার মাছ চাষিদের প্রায় কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসান সাজ্জাত।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসনে আরা তান্নি বলেন, টানা বর্ষণে উপজেলার কৃষি ও মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার বিষয়ে এখনও কোনো সরকারি নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
- বিষয় :
- ঝিনাইদহ