ঝালকাঠি
বিএনপিতে দ্বন্দ্ব দূরত্ব বাড়ছে
সভা হয় না, চলে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, কার্যালয় তালাবদ্ধ করে রাখেন সচিব

ফাইল ছবি
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪ | ২০:৪২
চার বছর আগেই শেষ হয়েছে ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। আজও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সভা হয় না বললেই চলে। চলছে পাল্টা কর্মসূচি। ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না দলীয় কার্যালয়ও। নানা কারণে যত দিন যাচ্ছে আহ্বায়ক কমিটির সঙ্গে নেতাকর্মীর দূরত্ব ও দ্বন্দ্ব বেড়েই চলছে।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। বেড়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা দ্বন্দ্ব। সম্প্রতি দলীয় কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করতে পারেনি জেলা মহিলা দল। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কার্যালয় তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন। এ নিয়ে জেলা নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
সদস্য সচিব যে কোনো কর্মসূচিতে বাসার নিচে চেম্বারে ডাকেন সবাইকে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বরিশালে শহীদদের স্মরণে মিছিলে যোগদান উপলক্ষে ফেসবুকে তাঁর পক্ষ থেকে পোস্ট দেওয়া হয়। সেই পোস্টে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব নেতাকর্মীকে চেম্বারে আসতে বলা হয়। প্রায়ই তিনি কার্যালয়ে সভা না ডেকে চেম্বারে নেতাকর্মীকে যেতে বলেন। এতে ক্ষুব্ধ হন নেতাকর্মীরা।
আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাবেক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর বলেন, দলকে চাঙা করতে হলে দলীয় কার্যালয়ে কর্মসূচি পালন করতে হবে। ব্যক্তিগত অফিসে নয়। তিনি আরও বলেন, আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর জেলা বিএনপির কোনো বর্ধিত সভা ডাকা হয়নি। এ অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। জরুরি ভিত্তিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেওয়া দরকার বলে জানান তিনি।
জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি বিত্তয় কুমার সরকার জানান, নৈতিক দায়িত্ব থেকে সাবেক এমপি আমু ও শাহজাহান ওমরসহ ৬২ জনের নামে মামলা করেছি। তবে বাদী হিসেবে দলীয় পরিচয় উল্লেখ করিনি। মামলার পর বিএনপি সদস্য সচিব স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। উল্লেখ করা হয়, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে মামলা করলে দায় ব্যক্তির। এর পরই দলীয় অপর এক মামলায় আমাকেই আসামি করানো হয়েছে। স্বার্থের কারণে কতটা খারাপ ভূমিকা রাখা যায়, এ মামলা তার প্রমাণ। বিষয়টি মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের লিখিতভাবে জানিয়েছি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জেবা আমিনা খান জানান, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বর্ধিত সভা না ডাকায় আমরা মতামত দেওয়ার সুযোগ পাই না।
ঝালকাঠি মহিলা দলের সভানেত্রী মতিয়া জুয়েল বলেন, সদস্য সচিব শাহাদাৎ হোসেন নানাভাবে হয়রানি করছেন। মিথ্যা অজুহাতে আমাকে শোকজ করেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল। যোগ দিতে কয়েকশ নেতাকর্মী আসেন। কার্যালয় তালাবদ্ধ করে রাখায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে কর্মসূচি পালন করেছি। এতে কেন্দ্রীয় নেতাদের অসম্মান করা হয়েছে।
আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন জানান, আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর ৬ ইউনিটের কমিটি করা হয়েছে। জেলা কাউন্সিল করার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করা হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশনা এলেই কাজ শুরু হবে। দলীয় কার্যালয় কর্মসূচি না দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অফিসের স্বল্প পরিসরে বসার পরিবেশ নেই। এ কারণে নেতাকর্মীরা আমার অফিসে বসতে চায়।
বর্ধিত সভার বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, সভা প্রায়ই হচ্ছে। কেউ না এলে সে জানবে কীভাবে? অনেকেই দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন। তারা কীভাবে জানবে কবে বর্ধিত সভা হয়েছে।