ঢাকা বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

কাজেই আসছে না ২১ কোটি টাকার দুই সেতু

কাজেই আসছে না ২১ কোটি টাকার দুই সেতু

সংযোগ সড়ক না থাকায় পরিত্যক্ত পড়ে আছে ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত সেতু সমকাল

 আনোয়ার হোসেন মিন্টু, জামালপুর 

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | ০০:২৩

সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না জামালপুর এলজিইডি (স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর) নির্মিত ২১ কোটি টাকার দুটি সেতু। ইসলামপুর ও মেলান্দহ উপজেলায় সেতু দুটির অবস্থান। প্রায় দুই বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় দুই প্রান্তের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগের শেষ নেই। 
সরেজমিন দেখা গেছে, ইসলামপুর উপজেলার পচাবহলা-ডেবরাইপ্যাচ সড়কের ফটিকা বিলের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয় দু’বছর আগে। উপজেলা এলজিইডি নির্মিত ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটির নির্মাণে ব্যয় হয় ৬ কোটি টাকা। উপজেলা সদর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরত্বের পচাবহলা গ্রামে রাস্তার শেষ মাথায় নির্মিত এই সেতুটির পশ্চিম পাশে কোনো সড়ক নেই। দুই কিলোমিটারের মধ্যে শুধু ফসলি জমি ছাড়া কোনো ঘরবাড়ি নেই। ফলে সেতুটি জনগণের কোনো কাজেই আসছে না। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি সেতুটির উদ্বোধন করেন সাবেক ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। দুই বছরেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়া ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।  
তাদের অভিযোগ, পচাবহলা থেকে চিনাডুলী, ডেবরাইপ্যাচ, শিংভাঙা ও ধর্মকুঁড়া এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সংযোগ সড়কের অভাবে ভোগান্তি রয়েই গেছে। পচাবহলা গ্রামের মমতাজ আলী বলেন, পশ্চিম পাশের রাস্তা তৈরি হলে অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ ও যানবাহন চলতে পারবে।  
অন্যদিকে, জামালপুর পৌর শহরের হাটচন্দ্রা এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত ৯৫ মিটার দৈর্ঘ্যের গার্ডার সেতুটির একই অবস্থা। সেতুর পশ্চিম প্রান্তে কোনো সড়ক না থাকায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুটিও কোনো কাজে আসছে না। 
জানা গেছে, ময়মনসিংহ অঞ্চল পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মেলান্দহ উপজেলার ভাবকী বাজারে  এইচডি-আটাবাড়ি সড়কে ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত গার্ডার সেতুটির কাজ শেষ হয় এক বছর আগে। সেতুটি নির্মাণ করে মেলান্দহ উপজেলা এলজিইডি। সেতুটির মাধ্যমে জামালপুর শহরের হাটচন্দ্রা থেকে আটারবাড়ি-ভাবকী হয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা মেলান্দহের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কথা ছিল। কিন্তু সংযোগ সড়ক না হওয়া সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।   
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটির ওপর এখন দিনরাত চলে জুয়ার আসর। এতে গ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। অনেকে বিপথগামী হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, নদীর ওপারে জমি অধিগ্রহণ করে ‘নকশি পল্লি’ করার প্রস্তাবনা ছিল। 
জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, অপরিকল্পিতভাবে সেতু তৈরি করে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয়ের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত। এলজিইডি জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল ত্রিপুরা বলেন, সেতু দুটির পশ্চিম প্রান্তের রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। রাস্তা দুটি নির্মিত হলে সেতুর সুফল পাবে লাখো মানুষ। 

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×