ঢাকা বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপিতে ফের সক্রিয় হচ্ছেন লবী

বিএনপিতে ফের সক্রিয় হচ্ছেন লবী

সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগার লবী

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | ১২:৫০

রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হচ্ছেন খুলনা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলী আসগার লবী। বিসিবির সাবেক এ সভাপতি আগামী নির্বাচনে খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে তিনি লবিং করছেন বলে জানা গেছে। খুলনায় অনুসারীরাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।

তবে ঢাকার বিএনপি সূত্রের ভাষ্য, দলের দুর্দিনে পাশে ছিলেন না লবী। এ জন্য হাইকমান্ড আপাতত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তাঁর ব্যাপারে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে রাজি নয়।

বিএনপির নেতাকর্মী জানান, গত ২৪ নভেম্বর খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের খুলনা পর্বের খেলা হয়। এ আয়োজনে আর্থিক সহযোগিতা রয়েছে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী লবীর। টুর্নামেন্ট ঘিরে স্টেডিয়াম এলাকা, নগরীর রয়্যাল মোড়সহ কয়েকটি স্থানে তাঁর ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড টানানো হয়। ঢাকা থেকে এসে নিজেও স্টেডিয়ামে যান। এর পরই লবীকে নিয়ে খুলনায় আলোচনা শুরু হয়েছে।

লবীর অনুসারীরা জানান, আবারও খুলনা বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চান লবী। দল থেকে খুলনা সদর আসনে আগের মতো মনোনয়ন দিলে, তিনি নির্বাচন করতে আগ্রহী। এ জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।

এ বিষয়ে ফোনে আলী আসগার লবী বলেন, ‘আমি তো বিএনপির রাজনীতি ছাড়িনি। রাজনীতির মধ্যে ছিলাম, এখনও আছি। বেশ কয়েক বছর বিভিন্ন কারণে খুলনায় যাওয়া কমে গিয়েছিল, বাকি সবকিছুতে অংশগ্রহণ ছিল। দলের জন্য আমার যা করা প্রয়োজন, করেছি।’ নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই হবে। বয়স হয়েছে, দেখি কী করা যায়। আল্লাহ ভরসা। এখনও তো অনেক সময় আছে।’

দলীয় সূত্র জানায়, ২০০১ সালে আলী আসগার লবী বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ওই বছরের অক্টোবরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া খুলনা-২ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। এর পর তাঁর ছেড়ে দেওয়া আসনে উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আলী আসগার লবী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর ২০০৫ সালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি খুলনা মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙে দিয়ে লবীকে আহ্বায়ক করে।

এমপি হওয়ার পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খুলনায় লবী ছিলেন প্রতাপশালী। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সরগরম থাকত তাঁর নগরীর বড় মির্জাপুর এলাকার বাড়ি। দলীয় নেতাকর্মী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড় লেগে থাকত। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তিনি বিসিবির সভাপতি হন। কিন্তু দেশে জরুরি অবস্থা জারি হলে ২০০৭ সালে ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে লবীর। ওই বছর ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার গুলশানের বাসা থেকে তাঁকে যৌথ বাহিনী গ্রেপ্তার করে। বেশ কয়েকটি মামলাও হয়। সব ব্যাংক হিসাব, স্থাবর-অস্থাবর অনেক সম্পদ এবং কয়েকটি গাড়ি জব্দ করে তৎকালীন সরকার। ২০০৭ সালের জুলাইয়ে একটি মামলায় আদালত তাঁকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।
২০০৯ সালের শুরুতে জামিনে বের হন লবী। এর পর থেকে বেশির ভাগ সময় তিনি দেশের বাইরে ও ঢাকায় অবস্থান করেছেন। দু-একবার খুলনায় গেলেও দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নেননি। তাঁর বাড়িও দীর্ঘদিন রয়েছে নিষ্প্রাণ।

খুলনার রাজনীতিতে বর্তমানে লবীর কোনো কার্যক্রম না থাকলেও অনুসারীরা তাঁর প্রত্যাবর্তনের প্রত্যাশায় রয়েছেন। তবে নগর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি এবং সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু গ্রুপ তাঁর সক্রিয়তা ইতিবাচকভাবে নেননি বলে জানা গেছে।
 

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×