পাগলা মসজিদে সাড়ে ৯ ঘণ্টায় মিলেছে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, চলছে গণনা
পাগলা মসজিদে শুরু হয়েছে টাকা গণনা। আজ শনিবার টাকা গণনার এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থী আনন্দে শূন্যে ছুঁড়ে দেয়। ছবি: সমকাল
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | ১৬:৩৫ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | ১৮:৫৭
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্সের ২৯ বস্তা টাকা গণনা চলছে। তবে বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা গণনা করে রূপালী ব্যাংকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম। সবশেষ গত ১৭ আগস্ট মোট ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়।
এদিকে জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান দানবাক্সগুলো খোলার পর পরই মসজিদের দোতলায় দাঁড়িয়ে দানের বিষয় নিয়ে একটি সাক্ষাৎকার দেন। তখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে এখন কত টাকা জমা আছে। জেলা প্রশাসক এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে সাক্ষাৎকার শেষ করে চলে যান।
ইতোপূর্বে যারাই জেলা প্রশাসক হিসেবে পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন, ব্যাংক হিসাবের গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তার কথা বলে কেউই সঞ্চিত টাকার বিষয়ে খোলাসা করে কিছুই বলতেন না। কেবল জমানো টাকা দিয়ে আগামী দিনের পরিকল্পনা আর লভ্যাংশ দিয়ে কাদেরকে সহায়তা করা হয়, এসব বিষয়ে কথা বলতেন। বর্তমান জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানও একই ধারায় বক্তব্য দিয়েছেন।
আজ শনিবার সকাল ৭টায় মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মো. হাছান চৌধুরীসহ অন্যান্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এরপর টাকাগুলো সিনথেটিক বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলার মেঝেতে ঢেলে মসজিদ কমিটি ও প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গণনা শুরু করা হয়। দানবাক্সে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও সোনা-রুপার গহনাও পাওয়া গেছে। প্রতি তিনমাস অন্তর দানবাক্স খোলা হয়। তবে এবার খোলা হয়েছে তিন মাস ১৩ দিন পর।
পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সের নূরুল কোরআন হাফিজিয়া মাদাসার ১২৮ জন ছাত্র, ৩৫ জন শিক্ষক ও স্টাফ, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার ১৫০ জন ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের ৭৫ জন স্টাফ টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন। ছোট ছোট শিক্ষার্থী এত বিপুল পরিমাণ টাকা গুণতে বেশ আনন্দ পায়। মাঝে মাঝে টাকাগুলো শূন্যে ছুঁড়ে দিয়ে সেই আনন্দ প্রকাশ করে তারা। এক ছাত্র দেখালো, কোন এক ব্যক্তি ৫০০ টাকার নোটের ব্যাংকে পিনআপ করা একটি বান্ডেল (৫০ হাজার টাকা) দিয়েছেন।
দেশি মুদ্রার পাশাপাশি পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা এবং সোনা-রুপার অলংকারও। কেউ কেউ ৫০০ টাকা নোটের বান্ডেলও (৫০ হাজার টাকা) দান করেছেন। পাওয়া গেছে মনোবাঞ্ছা পূরণের আর্তি প্রকাশ করা বহু চিঠি ও চিরকুটও। সার্বিক তদারকি ও নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন প্রশাসন ক্যাডারের ৯ জন কর্মকর্তা, ১০ জন সেনা সদস্য, ১৬ জন পুলিশ সদস্য ও ৯ জন আনসার সদস্য। গণনার ফাঁকে ফাঁকে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
- বিষয় :
- কিশোরগঞ্জ
- পাগলা মসজিদ