ক্ষতিগ্রস্ত চারটি পিলার যান উঠলেই কাঁপে

তিতাসের হাবাতিয়া নদীর কাকিয়াখালী সেতুর পিলার বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন -সমকাল
বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০০:০৭
সেতুটি দিয়ে চলাচলের সময় নড়াচড়া করে, কেঁপে ওঠে। জীবিকার তাগিদে ভয় নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এটি ভেঙে গেলে প্রায় ২০০ পরিবারের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লার তিতাসের মজিদপুর বাজার স্টেশনের অটোরিকশাচালক দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, মজিদপুর বাজার থেকে ৭০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ৭০টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করে। দুধঘাটা বাজার, মোহনপুর স্টেশন, কালির বাজার ও উজিরাকান্দি চলাচল করে যানবাহনগুলো।
তিতাসে হাবাতিয়া নদীর কাকিয়াখালী সেতুটি বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে যানবাহন ও তিন ইউনিয়নের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ভারী যানবাহন চলাচল করায় যে কোনো সময় ধসের মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকার মানুষের। প্রায় ১০ বছর ধরে এ অবস্থায় থাকলেও সংস্কারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। ছয় বছর আগে ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু’ হিসেবে ঘোষণা করলেও নেই কোনো সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড।
সরেজমিন জানা গেছে, উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের কাকিয়াখালী গ্রামসংলগ্ন হাবাতিয়া নদীর ওপর ২০০৬ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। বর্ষা মৌসুমে শত শত বালুবাহী বাল্কহেড এর নিচ দিয়ে যাতায়াত করে। এমন একটি নৌযানের ধাক্কায় সেতুর মাঝের চারটি পিলারের ঢালাই ভেঙে রড বের হয়ে গেছে। প্রতিটি পিলারের ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুটি পিলার খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। হালকা যানবাহন চলাচলের সময়ও কেঁপে ওঠে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন।
মজিদপুর গ্রামের তন্ময় হাসান কাজল বলেন, দাউদকান্দি উত্তর ইউনিয়নের হাসনাবাদ, বাহেরচর, মজিদপুর ইউনিয়নের চরবাটেরা, নতুন বাটেরা, নন্দিরচর, দুধঘাটা, দড়িগাঁও, মধ্য সাতানী, মোহনপুর, চর মোহনপুরের লোকজন মোহনপুর হয়ে কাকিয়াখালী সেতু দিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। জগৎপুর ইউনিয়নের রায়পুর, উজিরাকান্দি, ভাটিপাড়া, কৈয়ারপাড়, যাত্রাবাড়ী, কালাইরকান্দি, সাতানী ইউনিয়নের হরিপুর, ফরিদপুর, আলমপুর, কৃষ্ণপুর, মঙ্গলকান্দির বাসিন্দারাও এ পথে যাতায়াত করছেন।
উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস থেকে জানা গেছে, বালুবাহী বাল্কহেডের কারণে পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ২০১৮ সালের শেষ দিকে উপজেলা প্রশাসন থেকে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। চলাচলে সতর্কতা জারি করে সাইনবোর্ডও স্থাপন করা হয়েছিল। এটি সংস্কার এবং নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ছয় বছরে কয়েকবার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
প্রতিদিন সেতুটি দিয়ে চার-পাঁচ হাজার মানুষ যাতায়াত করে বলে জানান মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবু হানিফ। তিনি বলেন, অনেকবার এলজিইডি অফিসে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেছেন তারা। প্রকৌশলীরাও এসেছেন। কিন্তু এখনও নির্মাণকাজ শুরু হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সাপোর্টিং রোলার ব্রিজ নির্মাণের আওতায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ এসে পরিদর্শন করে নকশা করেছে। অনুমোদন পেলে কাকিয়াখালী নদীর ওপর দ্রুত সেতুটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে।
- বিষয় :
- সেতু