দোকানে কর্মীর লাশ, মেরে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ
তড়িঘড়ি করে পোড়াতে চেয়েছিলেন অভিযুক্ত মালিক
ফাইল ছবি
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০৭:১০
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি স্বর্ণালংকারের কারখানা থেকে কর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের নাম নগর পাল (৪৫)। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করলেও পুলিশকে না জানিয়ে মরদেহটি পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কারখানা মালিক। লাশ দাহের জন্য তাড়াহুড়াসহ তাঁর আচরণে সন্দেহ হওয়ায় থানায় যোগাযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে গতকাল সোমবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। নগর পালকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর ছেলে রুদ্র পাল (২২)।
জানা গেছে, উপজেলার সাহেববাজার এলাকায় স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ী নারায়ণ সাহার বাড়ি। তিনি মা কালী জুয়েলার্সের মালিক। বাড়ির পাশেই রয়েছে ছোট একটি কারখানা। সেখানে কারিগরের কাজ করতেন নগর পাল। তাঁর সঙ্গে কর্মরত ছিলেন রুদ্রও। তবে রোববার তিনি ছুটিতে টাঙ্গাইলের কালিহাতির বেতজুরা গ্রামের বাড়িতে ছিলেন।
রুদ্র বলেন, ‘রোববার দুপুরের পর নারায়ণ আমাকে ফোন করে জানান যে বাবা মারা গেছেন। এ খবর শুনে তাৎক্ষণিক কারখানার উদ্দেশে রওনা দেই। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সেখানে পৌঁছে দেখি, বাবার লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছিল। তাঁর পা দুটো মাটিতে লাগানো ছিল। ফাঁস টানানোর কথা বলা হলেও আশপাশে ছিল না কোনো চেয়ার বা টুল। এ সময় দোকান মালিকসহ আমরা তিনজন লাশটি নামাই। মরদেহে বুকসহ বিভিন্ন স্থানে মারধরের চিহ্ন পাওয়া যায়। আমরা গরিব মানুষ হওয়ায় দোকান মালিক নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়াতাড়ি লাশ বাড়িতে নিতে বলেন। তিনি গাড়িও ভাড়া করে দেন। সঙ্গে বাড়ি গিয়ে দ্রুত মরদেহটি পুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন নারায়ণ।’
অভিযুক্ত নারায়ণ বলেন, ‘রোববার বিকেলে কারখানায় নগর পালকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে স্থানীয় এক ব্যক্তি আমাকে জানান। তখন তাঁর পরিবারে খবর দিয়ে তাদের উপস্থিতিতে লাশটি নামাই। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশে জানালে অনেক ঝামেলা হবে, লাশ কাটাছেঁড়া করবে– এসব ভেবে পরিবারের সদস্যরা সরাসরি বাড়িতে নিতে চাওয়ায় থানায় খবর দেওয়া হয়নি। পরিবহন ব্যয়সহ সৎকারের সব খরচ আমি দিয়েছি।’
কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. জুবায়ের বলেন, নগর পালের রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পেয়েই লাশ উদ্ধারের জন্য স্থানীয় থানা পুলিশে বলা হয়। নিহতের পরিবার মামলা করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালিহাতি থানার এসআই মনসুর রহমান বলেন, নগর পালের লাশ উদ্ধারের সময় তাঁর গলা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। নিহতের স্বজনরা থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
- বিষয় :
- নিহত