ঢাকা বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সিসি ক্যামেরা নষ্ট, ভয়ে ছাত্রীরা

গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সিসি  ক্যামেরা নষ্ট, ভয়ে ছাত্রীরা

ছবি: ফাইল

 সাইফুর রহমান, ইবি

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৩:০৮

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) প্রায় ৫০০ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা রয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ১০০ ক্যামেরা অচল। কোনো ঘটনার ফুটেজ পাওয়া যায় না। নষ্ট পাওয়া যায় হার্ডডিস্ক বা মনিটর। প্রমাণ করা যায় না অপরাধ। এ কারণে ভয়ে থাকেন ছাত্রীরা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষের পাশে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা উপাচার্যের একান্ত সচিবের (পিএস) কার্যালয় ভাঙচুর করে। শিক্ষার্থীদের র‌্যাগ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে ককটেল উদ্ধার করা হয়েছিল। ৫ আগস্টের পর রেজিস্ট্রার, প্রকৌশলী, হিসাব পরিচালকের দপ্তরের নামফলক ভাঙচুর করা হয়। বিভিন্ন সময়ে আবাসিক হল ও কেন্দ্রীয় মসজিদে চুরি হয়। ক্যাম্পাসে মারামারিও হয়। এসব ঘটনার ফুটেজ উদ্ধার করতে পারে না কর্তৃপক্ষ।

সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, ডায়না চত্বর, জিয়া মোড় ও ডরমিটরি সংলগ্ন এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে মোট ২০টি সিসি ক্যামেরা চালু করে তৎকালীন প্রশাসন। যেগুলো প্রক্টর অফিস ও আইসিটি সেল থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ক্যামেরাগুলো লাগানো হয়েছিল। এর মধ্যে বর্তমানে ১টি ক্যামেরা সচল। এর বাইরে আবাসিক হল, বিভাগ, দপ্তর ও আবাসিক এলাকা মিলিয়ে প্রায় ৫০০ ক্যামেরা রয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক ক্যামেরা অচল।

গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হল ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল, টিএসসিসি ভবন, চিকিৎসা কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় কোনো ক্যামেরা সচল নেই। টিএসসিসির চারপাশে একাধিক ক্যামেরা থাকলেও ২০২০ সালের পর থেকে সেগুলো অকেজো। ক্যামেরা না থাকায় সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ইবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা। সেখানে বিভিন্ন সময় লোহার তৈরি বেড়া ও সরঞ্জাম চুরি হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনগুলোর ফটক, করিডর ও অভ্যন্তরে কিছু ক্যামেরা থাকলেও চারপাশে পর্যাপ্ত ক্যামেরা নেই। আবাসিক হলগুলোতে প্রায় ১৬টি করে ক্যামেরা লাগানো থাকলেও সেগুলোর অধিকাংশ অকেজো।

ইবির হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস তানজিনা বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হওয়ার ভয় থাকে। বিভিন্ন সময় ছাত্রী হলগুলোতে দেয়াল বেয়ে বহিরাগতরা এসে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চুরি করে। অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটে। কিন্তু পর্যাপ্ত ক্যামেরা না থাকায় দোষীদের শনাক্ত করা যায় না।

ইবি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) পরিচালক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, টিএসসিসির সিসি ক্যামেরার বিষয়টি আমাদের তদারকির মধ্যে রয়েছে। শিগগির এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানাব।

প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিগত হল প্রশাসনের আমলে এসব সিসি ক্যামেরা বিকল ছিল। শিগগির সিসি ক্যামেরার বিষয়টি সমাধানের পরিকল্পনা রয়েছে।

আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. শাহজাহান আলী বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি মূলত প্রক্টরিয়াল বডির কাজ। আমাদের কাজ হচ্ছে তাদের প্রযুক্তিগত সহায়তা করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, যেসব সিসি ক্যামেরা অকেজো, সেগুলো সংস্কার ও নতুন করে লাগানো হবে। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান খুঁজে বের করে ক্যামেরা লাগানো হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×