সংকট দেখিয়ে বেশি দামে সার বিক্রি
ছবি: ফাইল
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৩:২৬
ঈশ্বরদী উপজেলার চাষিরা সরকার নির্ধারিত দামে সার কিনতে পারছেন না। পরিবেশকরা (ডিলার) চাষিদের বাদ দিয়ে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। সেই সার খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। সিন্ডিকেটের কারণে এরপরও চাহিদামতো সার পাওয়া যাচ্ছেন না।
সাঁড়াগোপালপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক ফখরুল ইসলাম ঈশ্বরদী বাজার থেকে টিএসপি ৪০ টাকা, ডিএপি ৩০ টাকা, ইউরিয়া ৪০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন। শহরের বাজারে যে টিএসপি/ডিএপি ৫০ কেজির ১ বস্তা ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নে বস্তাপ্রতি দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এভাবে সিন্ডিকেটের কারণে একই সার একেক জায়গায় একেক দামে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, প্রতি বস্তা সার ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ১৪০০ টাকার বাংলা ড্যাপ এখন ২২০০-২৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিএডিসি ড্যাপ ১৩০০ টাকায়, টিএসপি (মরক্কো) ১৫০০ এবং বাংলা পতেঙ্গা ২৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সারের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে পরিবেশকরা সরবরাহে ঘাটতির কথা জানান। তবে কৃষকরা বলছেন, কারসাজি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের সরকার নির্ধারিত বিক্রয়মূল্য ২৭ টাকা, টিএসপির (ট্রিপল সুপার ফসফেট) ২৭ টাকা, ডিএপি ২১ টাকা ও এমওপির কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে ৩০-৪০ টাকা কেজির নিচে কোনো সার পাওয়া যায় না।
ঈশ্বরদীতে এ বছর অক্টোবর থেকে পেঁয়াজের আবাদ শুরু হয়েছে। শীতকালীন সবজি চাষও চলছে। এ সময় সারের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ সুযোগ নেন ব্যবসায়ীরা। গুদামে পর্যাপ্ত সার মজুত করে তারা দাম বাড়িয়ে দেন। সারের দামের পাশাপাশি পেঁয়াজ ও রসুনের বীজের দামও বাড়তি।
মিরকামারি গ্রামের পেঁয়াজ চাষি এনামুল হক বলেন, সারের দাম বাড়ায় ফসল আবাদ করতে খরচ আরও বেড়ে যাবে।
কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, খবরে শুনি, সার আসছে, কিন্তু পরিবেশকরা বলছেন সরবরাহ কম। বাজারে গিয়ে বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আবাদ খরচ উঠবে না।
খুচরা সার বিক্রেতা তৌফিক আলম জানান, দুই মাস ধরে সারের দাম ধীরে ধীরে বাড়ানো হচ্ছিল। এখন সংকটের অজুহাতে আরও বাড়ানো হচ্ছে। পরিবেশকরা বলছেন, সরকারি বরাদ্দের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় বাইরে থেকে সার আমদানি করতে হচ্ছে। এ কারণে দাম বেড়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বেশি দামে বিক্রি করছে। তাদের রুখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
ইউএন সুবীর কুমার দাশ বলেন, যারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- সার কারখানা
- পাবনা