মহালিয়া হাওর
জলাবদ্ধতায় ব্যাহত হচ্ছে বীজ ধান বপনের কাজ
পানি নিষ্কাশনে তাহিরপুরের মহালিয়া হাওরের হিজলা গ্রাম-সংলগ্ন এলাকায় বাঁধ কাটছেন কৃষকরা। পরে প্রশাসনের নির্দেশনায় বাঁধের কাটা অংশে মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছবি: সমকাল
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০১:৫৪
মহালিয়া হাওরে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বিঘ্নিত হচ্ছে কৃষকের বীজ ধান বপনের কাজ। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা। সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ এ দুটি উপজেলার সাতটি গ্রাম নিয়ে মহালিয়া হাওরের অবস্থান।
কৃষকরা জানিয়েছেন, হাওরের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর চাষাবাদের জমি রয়েছে। জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের হিজলা, মদনাকান্দি, নোয়াপাড়া ও দুর্গাপুর। অন্যদিকে তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সুলেমানপুর, জগদীশপুর ও নোয়াগাঁও মিলে এই আবাদি জমি।
হাওরপাড়ের কৃষকরা জানিয়েছেন, মৌসুমের এ সময়ে তারা বীজ ধান বপনের কাজ শেষ করে থাকেন। এ বছর হাওরের পানি না কমার কারণে তারা বীজ ধান বপন করতে পারছেন না। বেহেলী ইউনিয়ন পরিষদের হিজলা গ্রামের ইউপি সদস্য দেবাশীস তালুকদার জানান, মহালিয়া হাওরে পানি নিষ্কাশনের জন্য কোনো স্লুইসগেট নেই। তাই কৃষকরা সংশ্লিষ্টদের অনুমতি নিয়ে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
তারা জানান, জামালগঞ্জ উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জনির পরামর্শ নিয়ে মহালিয়া হাওরের পানি নিষ্কাশনের জন্য তারা দুই উপজেলার সাত গ্রামের কৃষক একটি দরখাস্ত দেন ইউএনও কার্যালয়ে। এলাকাতে এসে হিজলা গ্রামের উত্তরপাশের বাঁধটি কেটে দেন। তবে দরখাস্ত জমা দেওয়ার রিসিভ কপি তারা না আনায় সমস্যা সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ পাউবোর কর্মকর্তারা হাওরে ঘুরতে এলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বাঁধের কাটা অংশে স্থানীয় কৃষক সুলেমানপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ মিয়াকে পেলে তাঁকে এক মাসের কারাদণ্ড দেন। পরে কাটা বাঁধটি তারা আবার বন্ধ করে দেন।
তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, হাওরে পানি না কমার কারণে কৃষকরা বীজ ধান বপন করতে পারছেন না। মহালিয়া হাওরে স্লুইসগেট না থাকায় প্রতিবছর দুই উপজেলার পরগনার মানুষ মিলে পানি নিষ্কাশনের জন্য খাল কেটে দেওয়া হয়। এবারও সে নিয়মেই বাঁধটি কেটে দেওয়া হয়েছিল। এর আগে পরগনার লোকজনের স্বাক্ষরে এবারও আবেদন করা হয়েছিল। তবে ইউএনও জানিয়েছেন, নতুন করে আরেকটি আবেদন করতে হবে।
জামালগঞ্জ উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জনি জানান, হাওরের পানি নিষ্কাশন করতে হলে ইউএনও অফিসে আবেদন করতে হবে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তক্রমে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।
জামালগঞ্জের ইউএনও মুশফিকীন নূর জান্না বলেন, হাওরের পানি নিষ্কাশন করতে হলে কৃষকের পক্ষ থেকে কার্যালয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তক্রমে বাঁধ কাটার ব্যবস্থা করা হবে।
- বিষয় :
- সুনামগঞ্জ