১২ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক, পাঠদান ব্যাহত
প্রতীকী ছবি
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০১:৫৭
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষক নেই ১২টিতে। অবসর, বদলি ও মৃত্যুজনিত কারণে প্রধান শিক্ষকের এসব পদ শূন্য রয়েছে।
প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকেরও ১৭টি পদ শূন্য রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে দ্রুত প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে সেগুলো হলো, শ্যামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম বড়চর, নিশাপট, মড়রা, পশ্চিম নোয়াপাড়া, পুটিয়া, কেশবপুর, অলিপুর, নূরপুর, শেরপুর শুকুর আলী, বিশাউড়া ও লাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রায় ছয় মাস আগে অবসরে গেছেন। জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হামিদা আক্তার চৌধুরী বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁকে একাই দপ্তরের সব কাজকর্ম করার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করতে হয়। মাঝে মাঝে যেতে হয় উপজেলা শিক্ষা অফিসেও। এ সময় ছয়টি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দায়িত্বে থাকেন মাত্র দু’জন শিক্ষক।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা আফরোজা সুলতানা জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইশরাত জাহানের বদলিজনিত কারণে পদটি শূন্য হয়। এখানে সহকারী শিক্ষকেরও একটি পদ শূন্য রয়েছে। বিদ্যালয়ে অফিস সহায়কও নেই। সীমানা প্রাচীর নেই। রেললাইনের পাশে বিদ্যালয়টি অবস্থিত হওয়ায় সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা, পাঠদানসহ দপ্তরের আনুষঙ্গিক কাজেও সময় দিতে হয় তাঁকে। ফলে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
নিশাপট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অহিদুজ্জামান ২০২২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। শ্যামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আজম অন্যত্র সরকারি চাকরি নিয়েছেন এক বছর আগে। ২০১৩ সালে জাতীয়করণ করা কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আজও পায়নি প্রধান শিক্ষক।
এভাবে বিভিন্ন কারণে প্রধান শিক্ষক না থাকায় নানা জটিলতায় ভুগছে উপজেলার ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওইসব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরাই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় অভিভাবক সবুজ মিয়া জানান, শিক্ষক না থাকলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হয়। প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষক না থাকায় পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মানও কমছে। কাজল আহমেদ নামে আরেক অভিভাবক জানান, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে দ্রুত প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ জরুরি। তাসলিমা আক্তার নামে এক নারী জানান, শিক্ষক কম থাকায় বিদ্যালয়ে প্রতিদিন নিয়মিত সব ক্লাস হয় না। এতে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজমত আলী জানান, ক্লাস ও দাপ্তরিক কাজ একসঙ্গে করা কঠিন। শিক্ষক সংকটে শিশুদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি সরাসরি সরকারিভাবে হয়ে থাকে। বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়েও চাহিদা পাঠানো হয়েছে। সহকারী শিক্ষকের সংকটও দূর করার চেষ্টা চলছে।
- বিষয় :
- হবিগঞ্জ