বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
সজীব হোসেন বাবু
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০৪:২৯ | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০৬:৪৬
কুমিল্লা নগরীতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক যুবককে ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে নগরীর অশোকতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল বুধবার সকালে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
নিহত সজীব হোসেন বাবু (২০) জেলার দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরীতে স্বপ্ন সুপারশপে বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরির পাশাপাশি একটি মাদ্রাসার আলিম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সজিব নগরীর অশোকতলা এলাকায় পরিবার নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। একই এলাকার নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বুধবার ভোরে অশোকতলা এলাকায় ফেলে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয়দের সহায়তায় পরিবারের লোকজন আহত সজীবকে উদ্ধার করে কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সজিবের মামাত ভাই রাকিব বলেন, রাতে জীবন নামে এক যুবক সজীবকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে পরিকল্পিতভাবে নয়ন বন্ড, তার ভাই চয়নসহ অন্যান্য সহযোগীরা তাকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে মৃত ভেবে অশোকতলা রেললাইনের পাশে ফেলে রেখে যায়। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির পর সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের অভিযোগ, সন্ত্রাসী নয়ন বন্ড ও তার ভাই চয়নসহ তাদের সহযোগীরা এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি। এলাকায় মারামারি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও আছে। এ হত্যাকাণ্ডের পর কোনো প্রকার মামলা করলে নিহত সজিবের পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিয়েছে তারা। দুপুরে হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে দ্রুত মরদেহ নিয়ে অশোকতলা থেকে গ্রামে চলে যেতে বলে।
এ বিষয়ে এলাকায় গিয়ে নয়ন বন্ড কিংবা তার পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে দুপুরে স্থানীয় সাংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসী নয়ন বন্ডের সহযোগীরা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে নিহত সজিবের বোন সোনিয়া আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, যারা হত্যায় জড়িত তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। ভাই হারিয়েছেন, এখন নিজেদের জীবন নিয়েই চিন্তিত। তাই ভাবছেন, বাসা ছেড়ে এলাকায় চলে যাবেন। তিনি হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, নিহত সজিবের শরীরে ছুরিকাঘাতসহ বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরিবারের লোকজন বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়। ঘটনার নেপথ্যে পূর্ব বিরোধ নাকি মাদক সংশ্লিষ্টতা আছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
- বিষয় :
- নারায়ণগঞ্জ
- মরদেহ উদ্ধার