চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা
পুলিশের বিরুদ্ধে দুই যুবদল কর্মীকে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ
সংবাদ সম্মেলনে যুবদল নেতারা। ছবি-সমকাল
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮:২৩
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না মঞ্জুরকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার যুবদলের দুই কর্মীকে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। যুবদল নেতাদের দাবি, আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিল দুই কর্মী- দেলোয়ার হোসেন ও মো. নুরু। সেখান থেকে ফেরার পথে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুবদল কর্মী জানার পরও পুলিশ ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি তাদের।
বাকলিয়া থানা যুবদল নেতা জাকির হোসেন জানান, গত ২৬ নভেম্বর আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা ও মসজিদ ভাঙচুরের খবর শুনে নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে আদালত এলাকায় ছুটে যান তিনি। তার সঙ্গে দেলোয়ার হোসেন ও মো. নুরুও যান। ওইদিন রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত তারা কোতোয়ালী এলাকায় অবস্থান করেন। এরপর সেখান থেকে মিছিল নিয়ে চকবাজারের দিকে যান তারা। দেলোয়ার ও নুরু মিছিল থেকে বের হয়ে বাসার দিকে যেতে টেরিবাজারের রাস্তা দিয়ে ঢুকেন। সেখান থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পরও তাদের ছাড়েননি। ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে তৎকালীন ওসি ফজলুল কাদের চৌধুরী তাদের মামলার আসামি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাকলিয়া থানা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন লেদু বলেন, ‘দেলোয়ার হোসেন ও মো. নুরু যুবদলের সক্রিয় কর্মী। তারা পোশাক কারখানার মাল ওঠানো-নামানোর কাজ করেন। এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রকৃত ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার হীন চেষ্টায় কুচক্রী মহল যুবদলের কর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। আমরা যুবদলের কর্মীদের গ্রেপ্তারের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা যুবদলের কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করছি। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করায় দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।’
অভিযোগের বিষয়ে মামলাটির বাদী কোতোয়ালী থানার এসআই রবিউল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি মোবাইলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে গত ২ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন ও মো. নুরুর পক্ষে আদালতে জামিন চেয়ে ওকালতনামা জমা দেওয়ায় অতিরিক্ত পিপি নেজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন আইনজীবীরা। ওইদিন বিকেলে মহানগর পিপির কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় তাদের চাপের মুখে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর পদ থেকে পদত্যাগপত্রেও স্বাক্ষর করেন। তবে বিষয়টি আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ না দাবি করেছেন অতিরিক্ত পিপি আইনজীবী নেজাম উদ্দিন।
বাকলিয়া থানা যুবদল নেতা ইসমাইল হোসেন লেদু বলেন, যুবদলের দুই কর্মীর জামিনের জন্য চেষ্টা করা হলেও তাদেরকে ইসকনের ঘটনায় জড়িত বলে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়। অথচ ওই মামলায় যে ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে শুধু এই দুইজন মুসলিম। এই দুই যুবদল কর্মীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানির জন্য সম্পৃক্ত করা হয়েছে। যারা এই ঘটনার ধারে কাছেও ছিলেন না। ঘটনার সময় এই দুই যুবদল কর্মী তাদের নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে সত্য উদঘাটিত হবে।
গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তাকে কারাগারে নিতে চাইলে বাঁধা দেন তার অনুসারীরা। এসময় পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। একটি মামলায় দেলোয়ার ও মো. নুরুসহ ১৪ জনকে আসামী করা হয়েছে।
- বিষয় :
- সংবাদ সম্মেলন
- চট্টগ্রাম
- আইনজীবী
- হত্যা