চুয়াডাঙ্গায় কৃষি কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করলেন কৃষকরা
ফাইল ছবি
জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৩:০৩
চুয়াডাঙ্গা জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মাসুদুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে বদলি বাণিজ্য, সার ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম এবং কৃষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার এলাকার শত শত কৃষক উপপরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করেন। দিনভর উপপরিচলকে অবরুদ্ধ করে তাঁর অপসারণের দাবি তোলেন তারা।
কৃষকদের অভিযোগ, গত ৫ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিরুল হককে বিনা নোটিশে মাগুরা জেলার মহাম্মদপুর উপজেলায় স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। অথচ আমিরুল সাধারণ কৃষকের স্বার্থে কাজ করছিলেন। কৃষকরা সুখ-দুঃখে আমিরুলকেই পাশে পান। এমন বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকরা ফুঁসে ওঠেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কৃষকরা বিক্ষোভ করেন।
কৃষকদের অভিযোগ, উপপরিচালক মো. মাসুদুর রহমান কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নিয়মিত নানা অজুহাতে টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে ব্যর্থ হলেই ওই কর্মকর্তাকে বদলি করে দেওয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আজগর আলী বদলির আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি চাকরির শেষ দিনে অর্থের বিনিময়ে একাধিক বিতর্কিত বদলির আদেশ জারি করেন।
গাড়াবাড়িয়ার কৃষক মনির হোসেন বলেন, এখানে দুই-তিনজন সারের ডিলার আছে। তাদের কাছে গেলে সার পাওয়া যায় না। অথচ দোকানে গেলে বেশি দামে সার পাওয়া যায়। এক হাজার টাকার সার এক হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সার ডিলারদের কাছ থেকে মাসুদুর রহমান কমিশন আদায় করেন। এতে কৃষকরা সার পান না।
কৃষক আব্দুর রহমান ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘উপপরিচালক মো. মাসুদুর রহমান সরকার চুয়াডাঙ্গায় তিন মাস আগে এসেছেন। এই তিন মাসই সারের সংকট চলছে। তাঁর মতো অফিসার আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের ঘাস কাটা অফিসারই ভালো। যাকে বদলি করা হয়েছে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’
কৃষানি মৌসুমি বলেন, ‘আমিরুল হক কৃষকের প্রকৃত বন্ধু ছিলেন। তাঁর কারণে বড় কর্মকর্তারা অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে পারতেন না। অথচ এখন তাঁকেই বদলি করে দেওয়া হলে। আমরা ভালো কৃষি অফিসারকে চুয়াডাঙ্গাতে চাই।’
জেলার কৃষকেরা আরও অভিযোগ করেন, উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সমস্যার সমাধান না করে কৃষকদের সঙ্গে নিয়মিত দুর্ব্যবহার করছেন। অভিযোগের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কৃষি কর্মকর্তাকে আমি বদলি করিনি। অতিরিক্ত পরিচালক বদলি করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, কৃষকরা সকালে আমার কাছেও এসেছেন। তারা নানা অভিযোগ তুলে ধরেছেন। আমরা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখব।
- বিষয় :
- কৃষি