‘আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে’ বলার অভিযোগে ইউএনওকে প্রত্যাহারের নির্দেশ

‘আজ হোক, কাল হোক, আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে’– এমন মন্তব্যের অভিযোগে শাস্তির মুখোমুখি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মামুন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক প্রতিনিধির এমন অভিযোগে বুধবার রাতে তাঁকে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক বদলি) করা হয়েছে। তবে তাঁর পরবর্তী কর্মস্থল কোথায়, তা জানা যায়নি।

আজ দুপুরে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আনিসুর রহমান সজল। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লার সভাপতিত্বে ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী।
 
মতবিনিময় সভায় আনিসুর রহমান সজল বলেন, সম্প্রতি সদরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএনও আল মামুন। ওই অনুষ্ঠানে আমি বক্তব্য রাখি। সেখানে দিল্লি, না ঢাকার প্রশ্নে বলা হয়েছিল, দিল্লির কোনো প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। এর পরে ওই ইউএনও আমাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন। সে সময় তিনি তাঁর অঙ্গভঙ্গিতে এবং আমাদের কৌশলে বলার চেষ্টা করেন, আওয়ামী লীগ উইল বি কাম ব্যাক, টুডে অর টুমরো (আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে, আজ অথবা আগামীকাল)। 

তাঁর এ বক্তব্য শুনে তাৎক্ষণিক তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ওই সভায় উপস্থিত অতিথি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেসুর রহমান। তিনি বলেন, আমি পাবলিক্যালি (প্রকাশ্যে) বলে গেলাম, এত দুঃসাহস! এখনও তারা পরিবর্তিত সরকারের পেছনে ইন্ধন জোগাচ্ছে। যদি কেউ এদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, গোপনে আমাদের সংবাদ দেবেন। উই উইল নট অ্যাস্পায়ার অ্যানিবডি। উই উইল ডেসপারেট। দিস ইজ দ্য স্পিড অব আওয়ার গভর্নমেন্ট (আমরা কাউকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী হতে দেব না। আমরা অপ্রতিরোধ্য। এটা আমাদের সরকারের লক্ষ্য)।

এরপর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ওই ইউএনওকে বদলির জন্য জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যাকে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, আজকের মধ্যে এই ইউএনও উইথড্র (প্রত্যাহার) হবে এবং আমি আগামীকাল মিনিস্ট্রিতে (মন্ত্রণালয়) ফিরে গিয়ে তাঁকে সাসপেনশন (বরখাস্ত) করব। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি এমন কোনো কথা বলিনি। ওনাদের সঙ্গে যখন কথা বলি, তখন বিএনপি ও জামায়াতের নেতারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ওই ধরনের কোনো কথা সেখানে বলা হয়নি।