ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

পাঁচ কোটি টাকার উন্নয়নে বাধা ৫০ অবৈধ স্থাপনা

পাঁচ কোটি টাকার উন্নয়নে  বাধা ৫০ অবৈধ স্থাপনা

গোপালগঞ্জে মধুমতী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা সমকাল

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:৫৩

মধুমতী নদীর বিলরুট চ্যানেলের ভাঙন থেকে সড়ক, বাজার ও স্থাপনা রক্ষায় একটি প্রকল্পের কাজ দুই মাস আগে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ডাম্পিং কাজ সম্পন্ন করেছেন ঠিকাদার। কিন্তু অবৈধ স্থাপনার কারণে নদীভাঙন এলাকায় সিসি ব্লক স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ না হলে ওই এলাকায় সড়ক, বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীনের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুরে মধুমতী নদীর বিলরুট চ্যানেলে ২৫০ মিটার এলাকাজুড়ে অনেক আগে ভাঙন দেখা দেয়। এতে গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়ক, মঞ্জুরুল হক খান কলেজ, মসজিদ, উলপুর বাজার ও  বেশ কিছু বাণিজ্যিক ভবন হুমকির মুখে পড়ে। সরকার এসব রক্ষায় প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী প্রতিরক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেখানে ডাম্পিংয়ের কাজ সম্পন্ন করেছে। কিন্তু নদীভাঙন এলাকায় কিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এ কারণে সিসি ব্লক স্থাপন করা যাচ্ছে না। পাউবোর পক্ষ থেকে সেখানে ৫০টি অবৈধ স্থাপনা মালিককে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে। তবে অধিকাংশ স্থাপনা এখনও রয়ে গেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ না হলে বর্ষা মৌসুমে আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙনের কবলে পড়তে পারে।  
জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে এরই মধ্যে তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। দ্রুত ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে সেখানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। 
উলপুর বিলরুট চ্যানেল-সংলগ্ন একটি অবৈধ স্থাপনার মালিক সুকুমার বিশ্বাস বলেন, পাউবোর পক্ষ থেকে তাদের  দু-তিনবার মৌখিকভাবে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। পরে নোটিশও দিয়েছে। সেখানে ৮ বছর ধরে ব্যবসা করছেন জানিয়ে তাদের পুনর্বাসনের দাবি জানান তিনি।
অবৈধ স্থাপনার মালিক মো. মিন্টু শেখ বলেন, পাউবো তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যতটুকু ছেড়ে  দিতে বলেছে, তিনি ততটুকু ছেড়ে দিচ্ছেন। 
উচ্ছেদ অভিযানের আগেই সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। 
উলপুর বাজারে ব্যবসায়ী ও ইউপি সদস্য মনির হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে কেউ কেউ অবৈধ স্থাপনা সরিয়েছে। তবে এখনও অনেকের স্থাপনা রয়ে গেছে। সরকার এখানে নদীভাঙন রোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ শুরু করেছে। বাজার, সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীভাঙন থেকে রক্ষায় সবাই সহযোগিতা করবেন। 
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেনজীর কনস্ট্রাকশনের কর্মকর্তা  জাহিদুল ইসলাম নবী বলেন, সেখানে পাকা ভবন নির্মাণ করে নদীর পাড় অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে। এ কারণে সেখানে সিসি ব্লক স্থাপনের কাজ করা যাচ্ছে না। নদীভাঙন থেকে স্থায়ী প্রতিরক্ষার স্বার্থে সেখানে অবৈধ স্থাপনাগুলো দ্রুত উচ্ছেদ করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। যত তাড়াতাড়ি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে, তত দ্রুত এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন

×