ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

ঘন কুয়াশায় স্পিডবোট চলাচল বন্ধ, যাত্রীজট

ঘন কুয়াশায় স্পিডবোট চলাচল বন্ধ, যাত্রীজট

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটে সন্দ্বীপ যাওয়ার অপেক্ষায় যাত্রীরা সমকাল

 সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৩:০৩

শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে পড়ছে ঘন কুয়াশা। চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে সড়ক ও নৌপথে। এ পরিস্থিতিতে নৌযানে যাত্রী পরিবহন বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটে। সূর্যালোক দেখা না যাওয়ায় গতকাল শুক্রবার ছাড়েনি কোনো স্পিডবোট। এতে ঘাটে তৈরি হয় তীব্র যাত্রীজট। তীব্র ঠান্ডার মধ্যেই তাদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অবশেষে হতাশ হয়ে আশপাশের যাত্রীরা ফিরে গেছে বাড়িতে, আর দূর-দূরান্তের মানুষ আরও ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রামের সদরঘাট হয়ে অতিক্রম করেছেন এ নৌপথ।
গতকাল সকালে কুমিরা নৌঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বোটের টিকিট পাননি কেউ। নৌঘাটের টিকিট কাউন্টার ও দুটি জেটিতে উপচে পড়া ভিড় ছিল সন্দ্বীপগামী যাত্রীদের। শিশু, নারীসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাদের সেখানে বসে থাকতে হয় আরও কয়েক ঘণ্টা। কেউ কেউ জরুরি প্রয়োজনে নিয়েছেন জীবনের ঝুঁকি, দুপুরে আকাশ একটু পরিষ্কার হওয়ার পর দুটি পণ্যবাহী ট্রলার ছাড়লে সেগুলোতে উঠেন তারা।
ঘাটের ইজারাদার জগলুল হোসাইন নয়ন বলেন, স্কুল-কলেজের শীতকালীন ছুটি হওয়ায় যাত্রীদের কিছুটা চাপ রয়েছে। কিন্তু সমস্যা হয়েছে কুয়াশার কারণে নৌযান ছাড়তে না পারা। নৌযান চলাচল শুরু হলে যাত্রীদের দ্রুত পারাপার করা সম্ভব হবে।
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট থেকে আসা যাত্রী সুজন ঘোষ বলেন, ‘বার্ষিক পরীক্ষা শেষে সন্তানরা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বায়না ধরেছিল। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি, স্পিডবোট চলছে না। যাত্রীরও প্রচণ্ড চাপ। চার ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’
সন্দ্বীপ যাওয়ার জন্য কুমিরা ঘাটে ঢাকা থেকে আসা আবদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে তিন বন্ধুসহ ঘাটে এসেছিলেন তিনি। তখন প্রচুর ভিড় থাকায় বোটে উঠার সুযোগ পাননি। রাত ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও যেতে পারেননি সন্দ্বীপ। ঘাট এলাকায় কোনোরকমে রাত কাটিয়ে শুক্রবার সকাল ৭টায় ফের লাইনে দাঁড়ান তারা। যাত্রীর চাপ 
আগের দিনের চেয়েও বেশি দেখতে পান, এরপর চলবে না স্পিডবোট। বাধ্য হয়ে তারা জীবনের ঝুঁকি নেন; দুপুরে পণ্যবাহী ট্রলারেই সন্দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হন।
ঘাটে কথা হয় মালবাহী ট্রলারের মাস্টার কুতুব উদ্দিন সুজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্পিডবোট না চলায় জরুরি প্রয়োজনে ঘাটে আসা যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। তাদের অসহায়ত্ব বিবেচনায় পণ্যের সঙ্গে কয়েকজন করে যাত্রীও পরিবহন করা হচ্ছে। কিন্তু মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে। 
এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিরাঘাট থেকে সন্দ্বীপ যাওয়ার পথে সাগরে বিকল হয়ে পড়ে যাত্রীবাহী একটি সার্ভিস বোট। এতে ছিলেন ১৩০ যাত্রী। ঘণ্টাখানেক পর অন্য আরেকটি বোট গিয়ে নৌযানটি উদ্ধার করে সন্দ্বীপ ঘাটে নিয়ে যায়।
কুমিরা নৌ-পুলিশের ইনচার্জ মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, কুমিরাঘাট থেকে যাত্রীবাহী একটি সার্ভিস বোট সন্দ্বীপের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বোটটি সমুদ্রের মাঝে যাওয়ার পর ইঞ্জিন বিকল হয়ে সমুদ্রে ভাসতে থাকে। চালক মোবাইল ফোনে ঘাটের ব্যবস্থাপককে বিষয়টি জানালে আরেকটি বোট গিয়ে ভাসমান অবস্থা থেকে নৌযানটি উদ্ধার করে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।

আরও পড়ুন

×