ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

লটারিতে ইচ্ছেমতো আবেদন

লটারিতে ইচ্ছেমতো আবেদন

.

 পঙ্কজ দে, সুনামগঞ্জ     

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০০:০৩

সুনামগঞ্জের সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লটারি ভাগ্য নিশ্চিত করতে ৪৩টি আবেদন করেছেন একজন অভিভাবক। লটারিতে তাঁর সন্তানের নম্বরও উঠেছে। সন্তানের ভর্তির জন্য টাকাও জমা দিয়েছেন তিনি। গত মঙ্গলবার ওই স্কুলে ভর্তির জন্য দুটির বেশি (প্রভাতী-দিবা শাখা) আবেদন জমা দেওয়া শিক্ষার্থীদের আবেদন বাতিলের নির্দেশনা দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে হতাশ হয়ে জুবিলী স্কুলের বারান্দায় ঘুরছিলেন ওই অভিভাবক।
ঠিক একইভাবে সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েও ভর্তি হতে আগ্রহীরা একাধিক আবেদন করেছে বলে ওখানকার শিক্ষার্থী অভিভাবকরা জানিয়েছেন। দুটির বেশি আবেদনকারীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে সুনামগঞ্জ শহরের অসংখ্য অভিভাবক এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। 
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বেশির ভাগ অভিভাবক দুটির বেশি আবেদন করে সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছেন। এখন কারও ভর্তি বাতিল, কারও ভর্তি বহাল থাকার আশঙ্কা করছেন তারা। এতে পুরো ভর্তি প্রক্রিয়ায় হযবরল অবস্থা তৈরি হয়েছে।
শহরের আরপিন নগরের বাসিন্দা কবি-সাংবাদিক নওশাদ মসরু বলেন, ভর্তির আবেদনের সময় তিনি দেখেছেন বেশির ভাগ শিক্ষার্থী একাধিক আবেদন করেছে। তাঁর ছেলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হতে অন্যদের মতোই একাধিক আবেদন করেছে। লটারিতে তার নম্বর ওঠার পর তিনি ভর্তি ফি জমা দিয়েছেন। এখন বলা হচ্ছে, একাধিক আবেদন করায় ভর্তি বাতিল হবে। তাঁর দাবি অভিযুক্ত সবার ক্ষেত্রেই যেন একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া আটজন শিক্ষার্থীর ৫ থেকে ৪৩টি পর্যন্ত আবেদন পেয়েছেন তারা। বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্বে থাকা শিক্ষক শামসুদ্দিন আহমদ বললেন, ভর্তি নীতিমালায় উল্লেখ আছে, একজন শিক্ষার্থী প্রভাতী ও দিবা শাখায় দুটির বেশি আবেদন করতে পারবে না। এরপরও অনেকে নিয়মের বাইরে বেশি আবেদন করেছে। নাম পরিবর্তন এবং জন্মনিবন্ধনের ডিজিট পরিবর্তন করে এসব আবেদন করা হয়েছে। 
এদিকে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির প্রভাতী দুই শাখার স্থলে এক এবং দিবা শাখায়ও এক শাখা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে শহরের শিক্ষার্থী অভিভাবক ও সচেতন মহলের মধ্যে। প্রাথমিক শাখায় শিক্ষার্থী ভর্তি কমানোর সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে নিতে পারছেন না অভিভাবকরা। তারা ভর্তি সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নানা জায়গায় ধরনা দিচ্ছেন। 
সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এনামুল হাসান শাহীন বলেন, এই বছর বিদ্যালয়ের তৃতীয়, ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে ভর্তি হতে চেয়েছিল ২২শ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণিতে ১১০, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৯৭ এবং নবম শ্রেণিতে ৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। যারা দুইয়ের বেশি আবেদন করেছে, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাদের আবেদন বাতিল করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাথমিক শাখাতে চার সেকশনে ছাত্র ভর্তি করলে পাঠদান করতে সমস্যা হয়। এ ছাড়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির সময়েও অন্য কোনো স্কুল থেকে ছাত্র নেওয়া সম্ভব হয় না। অর্থাৎ সারা জেলার শিক্ষার্থী তখন বঞ্চিত হয়। 

আরও পড়ুন

×